আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার পর সম্প্রতি তাদের সোনার দোকানে শুল্ক গোয়েন্দাদের অভিযানের প্রেক্ষাপটে বাজেটের আগে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের দাবিগুলো তুলে ধরে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
ধর্ষণের মামলার আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলের পক্ষে অবস্থান না নেওয়ার কথাও বলেন বাজুস নেতারা। তবে ওই ঘটনাটি ধরে সোনার দোকানগুলোকে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সোনার দোকান মালিকদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, আমাদের দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এলসি দিয়ে কোনদিন সোনা আমদানি করা হয়নি।
আমদানি না থাকায় ব্যবসায়ীদের সোনার উৎস অবৈধ পথে আসা বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে আগরওয়ালা বলেন, “আমরা বাই জেনারেশন এই ব্যবসা পেয়ে এসেছি, আমরা জানি সেটা বৈধ। আমাদের কোনোদিন বলা হয়নি তাঁতীবাজারের পোদ্দারদের থেকে আমরা যেই গোল্ড কিনি এটা অবৈধ। আমাদের কোনোদিন বলা হয়নি ব্যাগেজ রুলে একজন কাস্টমার যখন একশ গ্রাম সোনা নিয়ে আসে, সেটা কেনা অবৈধ।
“যেহেতু সরকার আমাদের কোনোদিন স্বর্ণ আমদানি করার সুযোগ দেয়নি, তাই আমরা তাই মনে করি, আমরা যেভাবে ব্যবসা করি সেটা বৈধ।”
পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের পোদ্দারদের কাছ থেকে দোকান মালিকরা সোনা পান বলে জানান তিনি।
“এখন অভিযানের পর শুনতে পারছি আমরা যেসব সোনা কিনি সেগুলো দেশের প্রচলিত আইনের সঙ্গে যাচ্ছে না।”
তিনি বলেন, ২৮ লাখ লোক জুয়েলারি ব্যবসায় জড়িত। তারা সরকারকে প্রচলিত নিয়মে ৪০০ কোটি টাকা ভ্যাট দিচ্ছে, ব্যবসা অবৈধ হলে সরকার ট্যাক্স ভ্যাট নিল কীভাবে?
“এখন আমরা চাই, সরকার এই অর্থ বছরের মধ্যে স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা, স্বর্ণ শিল্পী নীতিমালা করে দিক,” বলেন আগরওয়ালা।
গত চার বছরে চারবার স্বর্ণ আমদানি নীতিমালার দাবি তুলেছিলেন বলে জানান বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান নির্বাহী কমিটির সদস্য দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন।
চোরাই সোনার বিষয়ে তিনি বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে সিরিজ স্টোরির মাধ্যমে দেশবাসী জানতে পেরেছে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আদালতে যারা ধরা পড়েছে তারা বলেছে তারা কোথায় সোনা নিয়ে যাচ্ছে।”
বাজুসের সহ-সভাপতি এনামুল হক খান দোলন বলেন, “আমার ধারণা, এই (চোরাই) সোনা আমার দেশের জন্য না, পার্শ্ববর্তী দেশের জন্য।”
পাচার বন্ধে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের যৌথ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বাজুস নেতারা বনানীতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়েও সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুখোমুখি হন।
দেওয়ান শাহিন বলেন, “যে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ।
“বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি এটা কোনোদিন সমর্থন করবে না। একজন মা, একজন বোন নির্যাতিত হবে, তাদের পক্ষে বলার মতো মানসিকতা বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির কারও নেই।”