রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করবে ভারতীয় কোম্পানি

বহুল আলোচিত রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ পেয়েছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস (বিএইচইএল)।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2017, 06:10 PM
Updated : 25 April 2017, 06:33 PM

মঙ্গলবার কোম্পানির ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ১৫০ কোটি (১ দশমিক ৫ বিলিয়ন) ডলারের এই কাজ পাওয়ার কথা জানানো হয়।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটির এটাই দেশের বাইরের সবচেয়ে বড় নির্মাণ কাজ। বাংলাদেশে এর আগে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছিল ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস।

বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে ১৩০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে।

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে যৌথ কোম্পানি গঠন করে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। যৌথ কোম্পানির ৫০ শতাংশ করে মালিক বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি) এবং ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) লিমিটেড।

মোট ২০০ কোটি ডলারের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ১৬০ কোটি ডলার ঋণ দেবে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময়ে এই ঋণচুক্তি সই হয়।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উভয় সংস্থা ১৫ শতাংশ করে বিনিয়োগ করবে। বাকি ৭০ শতাংশ দিবে এক্সিম ব্যাংক। এই ৭০ শতাংশ অর্থায়নের ব্যাংক গ্যারান্টার থাকবে বাংলাদেশ।

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রস্তাবিত নকশা

ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কার্যাদেশ অনুযায়ী তারা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নকশা প্রণয়ন থেকে শুরু করে নির্মাণের পুরো কাজ এমনকি নদীতে জেটি স্থাপনের কাজও ‘টার্নকি’ ভিত্তিতে করবে।

‘টার্নকি’ ভিত্তিতে কাজের মানে হল- নির্বাচিত কোম্পানিকে নির্মাণের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে। একটি নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হবে। কোম্পানি কাজ শেষে প্রকল্পটি বুঝিয়ে দেবে।

সুন্দরবনের কাছে হওয়ায় রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে ব্যাপক বিরোধিতা রয়েছে। পরিবেশবাদীরা বলছে, কয়লা ভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দেবে।

তবে বাংলাদেশে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সুন্দরবন রক্ষায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে, যাতে পরিবেশের ক্ষতি ন্যূনতম মাত্রায় রাখা হবে।

ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালসের বিজ্ঞপ্তিতে রামপালে পরিবেশ রক্ষায় এফজিডি প্ল্যান্ট স্থাপনের কথা বলা হয়েছে, যাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নিঃসরিত সালফার গ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ছাই দূষণ বন্ধের পদ্ধতি ব্যবহারের কথাও জানিয়েছে কোম্পানিটি। পানি শোধনাগারও করবে তারা।

রামপালের বড় কাজ পাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ভারতের পুঁজিবাজারে ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালসের শেয়ারের দাম ২ শতাংশ বেড়ে গেছে।

আগ্রহী কয়েকটি কোম্পানির মধ্য থেকে ভারতীয় কোম্পানিটিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ দেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বিআইএফপিসিএলের কোনো কর্মকর্তার সাড়া পাওয়া যায়নি।