‘প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা’ পেতে ফি গুনতে হবে অপারেটরদের

মোবাইল ফোন অপারেটদের ‘প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা’ বা যে কোনো তরঙ্গে যে কোনো প্রযুক্তি সেবার সুযোগ পেতে ফি বা চার্জ দিতে হবে বলে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

শামীম আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2017, 11:09 AM
Updated : 29 March 2017, 11:09 AM

টু জি ও থ্রি জি সেবার জন্য বরাদ্দ করা তরঙ্গে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা পেতে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গে অপারেটরদের ৫ থেকে ৭ মিলিয়ন ডলার চার্জ দিতে হতে পারে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, “অপারেটরদের প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দিতে উদ্যোগ প্রায় চূড়ান্ত। খুব শিগগিরিই এ সুযোগ অপারেটররা পেতে যাচ্ছে।”

প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা পেতে অপারেটরদের কোনো ধরনের ফি বা চার্জ দিতে দিতে হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি প্রধান বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বরাদ্দকৃত তরঙ্গে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা পেতে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গে অপারেটরদের ৫ থেকে ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চার্জ দিতে হবে।”

অপারেটররা সেবার মান বাড়াতে দীর্ঘদিন ধরে ‘টেক নিউট্রালিটি’ (প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা- যে কোনো তরঙ্গে যে কোনো প্রযুক্তি সেবা) দাবি করে আসছে।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার উপস্থিতিতে টেলিযোগাযোগ বিভাগে গত জুলাই মাসে একটি সভা হয়। সেই সভার সিদ্ধান্তের আলোকে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দেওয়ার বিষয়টি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয় বিটিআরসিকে।

টু-জির ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড এবং থ্রিজির ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের মিলিয়ে গ্রামীণফোনের হাতে মোট তরঙ্গ রয়েছে ৩২ মেগাহার্টজ।

এছাড়া বাংলালিংক ২০ মেগাহার্টজ এবং রাষ্ট্রায়াত্ব টেলিটকের হাতে রয়েছে ২৫ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে।

বর্তমানে রবির হাতে ১৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ এবং এয়ারটেলের ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। দুই অপারেটর একীভূত হওয়ার পর তরঙ্গের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ। যদিও একীভূত হওয়ার পর এয়ারটেলের কাছ থেকে ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ফেরৎ দেওয়ার কথা বলছে বিটিআরসি।

অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অপারেটরদের সেবার মান বৃদ্ধিতে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার প্রয়োজন। পুরো টেলিকম খাত এখন ডাটা ব্যবসার দিকে যাচ্ছে। প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দিলে ইন্টারনেট ব্যবহারবৃদ্ধি সব সেবার মান বাড়বে। এর ফলে সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।”

প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার জন্য ফি বা চার্জ ধার্য বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত মন্তব্য করে করে নুরুল কবির বলেন, “সরকারের দীর্ঘ মেয়াদি রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে চিন্তা করা উচিৎ। কারণ সেবার মান বাড়লে ডাটা ব্যবসা বাড়বে এবং সরকারেরও রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার জন্য ফি বা চার্জ দিতে হলে অপারেটরদের ভবিষ্যতে বিনিয়োগে সমস্যা হবে।