ধানের দাম বাড়ার কারণে চালের দামও বাড়াতে হচ্ছে বলে যুক্তি দিচ্ছেন মিল মালিকরা।
শুক্রবার ঢাকার মিরপুর-১১ নম্বরের পাইকারি বাজার ও কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে মোটা চালের ৫০ কেজির বস্তায় অন্তত ৫০ টাকা করে দাম বেড়েছে, মিনিকেটের বস্তায়ও দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা।
মিরপুরের চালের পাইকারি ও খুচরা দোকান এসএস এন্টারপ্রাইজ মালিক আকতার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে গুটি স্বর্ণা ৫০ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা বেড়ে ১৭৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট বস্তায়ও ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে।
তবে খুচরায় কেজিতে এক টাকা করে বাড়িয়েছে বিক্রেতারা।
“বাজারে এখন রশিদ রাইস মিলের মিনিকেট চালের বস্তা ২৪১০ টাকা, মোয়াজ্জেম মিলের চাল ২৪০০ টাকা, সাগর অটো রাইস মিলের চাল ২৩৮০ টাকা,” চালের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন আকতার।
আগের কেনা চাল থাকায় ব্যবসায়ীরা সমন্বয় করে বিক্রি করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চালের পাইকারি দোকান ‘ভাই ভাই রাইস এজেন্সির’ স্বত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন বলেন, “মোটা চাল গত এক সপ্তাহে বস্তায় অন্তত ৫০ টাকা করে বেড়েছে মিল পর্যায়ে। সেই হিসাবে আমাদেরকেও দাম বাড়াতে হয়েছে।”
বাজারে গুটি স্বর্ণার ৫০ কেজির বস্তা ১৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এই পাইকারি বিক্রেতা।
শাহাদাতের দোকানে রশিদ মিনিকেট ২৪৩০ টাকা, মোজাম্মেল মিনিকেট ২৪১০ টাকা এবং সাগর মিনিকেট ২৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের এমন দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কারওয়ান বাজারের আলমগীর হোসেন বলেন, “চালের কেজি ৫০ টাকা হলে মানুষে কীভাবে পোষাবে? কী খেয়ে বাঁচবে?”
বাজারে অন্যান্য দ্রব্যের দাম বাড়ার চেয়ে চালের দাম মানুষের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে মন্তব্য করে এসব নিয়ে সাংবাদিকদের লেখার আহ্বান জানান তিনি।
নওগাঁ জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মওসুমের শেষ প্রান্ত হওয়ায় ধানের দাম কিছুটা বেড়েছে। তাই চালেরও দাম বেড়েছে।”
এরপরও তার হিসাবে ঢাকার বাজারে যে দামে পাইকারি চাল বিক্রি হচ্ছে, তা আরেকটু কমিয়ে রাখলেও ব্যবসায়ীদের লাভ হওয়ার কথা।
ফরহাদ বলছেন, “ঢাকার বিক্রেতারা যাই বলুক, নওগাঁর মিলগুলোতে ৫০ কেজির বস্তা সাড়ে ২২শ টাকা থেকে ২৩শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”
এর বাইরে ৫০ টাকা পরিবহন খরচ যোগ করার পর লাভ নির্ধারণ করা উচিত বলেও তার মত।
সে হিসাবে ঢাকার ব্যবসায়ী ও জেলা শহরের মিল মালিকদের দাবির মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ টাকার হেরফের লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তবে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে চালের দাম কমতে পারে বলে আশার কথা শোনান চাল মালিক সমিতির নেতা ফরহাদ।
তিনি বলেন, “আগামী ২০ দিনের মধ্যে নতুন ধান বাজারে উঠতে শুরু করবে, তখন চালের দামও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে।”
বাজারে রোপা আমন মওসুমের মূল ফল স্বর্ণা ধানের মণ (৩৭ কেজি) এখন ৯৫০ টাকা, গুটি স্বর্ণার মণ ৯০০ টাকা। ২০ দিনের মধ্যে ইরি-বোরো মওসুমের নতুন ধান আসবে। চৈত্রের শেষ সপ্তাহ থেকে আসা শুরু হবে। তখন দামও ধীরে ধীরে কমতে থাকবে বলে ভাষ্য তার।