শুক্রবার ঢাকার কয়েকটি কাচাবাজার ঘুরে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম আগের সপ্তাহের কাছাকাছি পাওয়া গেছে।
গাবতলী পশুর হাটে ‘অতিরিক্ত’ খাজনা আদায় এবং গরু আনার পথে চাঁদাবাজি বন্ধসহ কয়েকটি দাবিতে গত সোমবার থেকে ঢাকায় ধর্মঘট করছেন মাংস বিক্রেতারা।
গরু-খাসির মাংস বিক্রি বন্ধ হওয়ায় বেড়ে গেছে মুরগির দাম। তবে বাজারে মাংস ফিরলেও মুরগির দাম আর কমবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
তাদের ভাষ্যমতে, মুরিগর দাম বাড়ার পিছনে খামার পর্যায়ে দাম বৃদ্ধিসহ আরও কয়েকটি কারণ রয়েছে।
মিরপুরের মুরগি বিক্রেতা শহিদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কালও পাকিস্তানি কক মুরগি ২২০ টাকায় পাইকারি বাজার থেকে কিনেছি। আজ কিনতে হয়েছে ২৩৫ টাকায়। সুতরাং সব খরচ মিলিয়ে ২৫৫ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে।”
মুরগির দাম বৃদ্ধির জন্য মাংস ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট কোনো কারণ নয় দাবি করে তিনি বলেন, “সব জায়গায় সিন্ডিকেটের কারণে এসব হচ্ছে। ফার্ম ও পাইকারি পর্যায়ে দাম বেড়ে যাচ্ছে।”
মহাখালী কাচাবাজারের পাইকারি বিক্রেতা সৈয়দ হুমায়ুন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গরুর মাংস ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার হলেও মুরগির দাম বাড়তিই থাকবে।
“মূলত মুরগির বাচ্চার দাম গত দেড় মাসে প্রতিটিতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৭০ টাকায় পৌঁছেছে। শীতের মওসুমে কিছু ফার্মের উৎপাদন কমে গিয়েছিল। এছাড়া এখন ঋতু পরিবর্তনের সময়ে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের ভয়ে খামারিরা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। এসব কারণে দাম স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে গিয়েছে।”
মিরপুরের মতোই মহাখালী কাচাবাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি, পাকিস্তানি কক ও ব্রয়লার মুরগি। তবে এখানে ধর্মঘটের মধ্যেও ৪৮০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা প্রতি কেজি।
মাংস ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, “যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে আমরা ধর্মঘটের সাথেই আছি। তবে নিরুপায় হয়ে আজকে একটি গরু জবাই দিয়েছি। কারণ দোকান ভাড়া, কর্মচারীর খরচসহ বিভিন্ন ব্যয় সামলাতে আমাদের তা করতে হচ্ছে।”
গত তিন দিনে মসুর ডালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমেছে বলে জানান মিরপুর-২ নম্বর কাচাবাজারের ‘সুমন স্টোরের’ বিক্রয়কর্মী আনোয়ার হোসেন।
পুরান ঢাকায় ডালের পাইকারি দোকান রাজ্জাক বিতানের পরিচালক চুন্নু হাজী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দেশি মসুর ডাল কেজিতে ৩/৪ টাকা আর আমদানি করা ছোট দানার মসুর ডাল কেজিতে ৫ টাকা কমেছে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে মাছ ও শাক-সবজির দাম আগের সপ্তাহের মতোই রয়েছে।
মিরপুরে পাঙ্গাস মাছ কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, রুই ২৪০ টাকা, কাতল ১৬০ টাকা, কার্ফু ১৬০ টাকা ও পাবদা মাছ ৬০০ টাকায় কেজি বিক্রি গতে দেখা গেছে। জোড়া ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকায়।
সবজির বাজারে প্রতি কেজি পেপে ২০ টাকায়, সিম ৩৫ টাকায়, শালগম ২০ টাকায়, টমেটো ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি প্রতিটি ২০ থেকে ২৫ টাকা, কাচকলার হালি ২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।