টানা ২ বছর লোকসানের পর ফের মুনাফায় বেসিক ব্যাংক

ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে টানা দুই বছর লোকসানের পর ২০১৬ সালে ফের পরিচালন মুনাফা করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2016, 02:03 PM
Updated : 31 Dec 2016, 02:48 PM

শনিবার বিকালে ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, ২০১৬ সালে ব্যাংকটি পরিচালন মুনাফা করেছে ১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ২০১৫ সালে ব্যাংকটির পরিচালন লোকসানের পরিমাণ ছিল ২৫৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ২০১৪ সালে এই লোকসান ছিল ৯৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

আলাউদ্দিন এ মজিদ বলেন, “আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। সবাই ভেবেছিল ব্যাংকটি শেষ হয়ে যাবে। প্রশাসনিক খরচ কমানো, নতুন ঋণ বিতরণ, খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলসহ নানা তৎপরততার মাধ্যমে ব্যাংকটি পরিচালন মুনাফা অর্জন করেছে।”

পরিচালন মুনাফা অবশ্য নিট বা প্রকৃত মুনাফা নয়। এ থেকে সরকারের ট্যাক্স পরিশোধ, প্রভিশন রেখে যেটা অবশিস্ট থাকবে সেটাই নিট মুনাফা।

এক সময় লাভজনক ব্যাংক হিসেবে পরিচিত বেসিক ব্যাংকে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে আবদুল হাই বাচ্চুকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়ার পর থেকেই ব্যাংকটির অবস্থা খারাপ হতে থাকে।

অভিযোগ রয়েছে, বাচ্চুর সময়কালে (২০০৯-১৪) প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব‌্যাংকটি থেকে। চাপের মুখে থাকা বাচ্চু ২০১৪ সালে পদত্যাগ করেন।

খেলাপি ঋণের কারণে মূলধন ঘাটতিতে পড়া বেসিক ব্যাংককে ঘাটতি পূরণে কয়েক দফায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। ব্যাংকটির বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি রয়েছে, যা বন্ডের মাধ্যমে পূরণ করতে চায় সরকার।

বিদ্যমান আর্থিক সঙ্কট থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় হিসেবে গত অগাস্টে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে বন্ড চেয়ে আবেদন করা হয় বলে মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন বেসিক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ।

শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, বর্তমানে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমছে এবং আমানতে পরিমাণ বাড়ছে।

২০১৫ সালে বেসিক ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ৭৫৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা; ২০১৬ সালে আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭১৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

২০১৫ সালে বেসিক ব্যাংকের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা; ২০১৬ সালে ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৪৮৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

আলাউদ্দিন মজিদ বলেন, ২০১৫ সালে ব্যাংকটির খেলাপী ঋণ ছিল মোট বিতরণ করা ঋণের ৫০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ২০১৬ সালে তা কমে ৪৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

আগামী দিনগুলোতে ব্যাংকটির অবস্থা আরও ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বেসিক চেয়ারম্যান।