এক হল রবি-এয়ারটেল

একীভূত কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করল মোবাইল ফোন অপারেটর রবি ও এয়ারটেল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2016, 02:02 PM
Updated : 16 Nov 2016, 02:02 PM

একীভূত কোম্পানি হিসেবে রবি’র বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে বুধবার থেকে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে প্রথম একীভূতকরণ কার্যকর হল।

রবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রবি ও এয়ারটেল একীভূত কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেড নামে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। রবি’র পাশাপাশি কোম্পানির একটি স্বাধীন ব্র্যান্ড হিসেবে থাকছে ‘এয়ারটেল’।

একীভূতকরণ শেষে বর্তমানে অপারেটরটির মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন কোটি ২২ লাখ, যা অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যার বিচারে দ্বিতীয় অবস্থানে। পাঁচ কোটির বেশি গ্রাহক নিয়ে শীর্ষে আছে গ্রামীণ ফোন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষে রবি’র অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ মালিকানায় রয়েছে আজিয়াটা। ভারতী এয়ারটেলের ২৫ শতাংশ এবং বাকি ৬ দশমিক ৩ শতাংশের মালিক জাপানের এনটিটি ডোকোমো।

রবি ও এয়ারটেল একীভূত হওয়ার ফলে দেশজুড়ে কোম্পানিটির ‘সবচেয়ে’ বিস্তৃত নেটওয়ার্কের পাশাপাশি মোবাইল ইন্টারনেট সেবায় আরও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে অপারেটরটি।

একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য কোম্পানির সব শেয়ারহোল্ডার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং রবি ও এয়ারটেলের গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।

এই যাত্রায় গ্রাহকদের আরও সুলভে উন্নত মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, এই একীভূতকরণের ফলে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ বাজারে স্থিতিশীলতা এবং সুষ্ঠু ব্যবসায়িক পরিবেশ আরও দৃঢ় হবে। দ্রুততার সাথে মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবার বিস্তৃতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব হবে।”

“একীভূত কোম্পানি হিসেবে আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা থাকবে, আমাদের ৩ কোটি ২২ লাখ গ্রাহককে সাশ্রয়ী মূল্যে আকর্ষণীয় এবং উদ্ভাবনী মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদান করা।”

মোবাইল খাতে গত পাঁচ বছরে রবির সবচেয়ে বেশি সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আসার কথা জানিয়ে মাহতাব বলেন, “একীভূতকরণের ফলে সামনের দিনগুলোতে আমাদের শেয়ারহোল্ডারা আরও বিনিয়োগে উৎসাহিত হবেন।”

আজিয়াটার প্রেসিডেন্ট এবং গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার তান শ্রি জামালুদিন ইবরাহিম বলেন, “ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও কম্বোডিয়ার মতো বাজারে আমাদের কৌশলগত একীভূতকরণের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ বাজারের প্রথম একীভূতকরণ প্রক্রিয়াটি সফলভাবে শেষ করতে সহায়ক হয়েছে।”

আজিয়াটা প্রেসিডেন্ট বলেন, “নিজেদের অবস্থান সুসংহত করার পাশাপাশি দক্ষতা বৃদ্ধি, বাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মুনাফার সম্ভাবনা তৈরি করা এবং দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে গ্রাহক ও গণমানুষের জন্য মানসম্মত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আজিয়াটা অভ্যন্তরীণ একীভূতকরণের দিকে নজর দিয়েছে।’’

এই একীভূতকরণ বাংলাদশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং এতে টেলিযোগাযোগ শিল্পের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশে একীভূত হয়ে ব্যবসা পরিচালনার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেয় রবি ও এয়ারটেল।

এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি হিসাবে আজিয়াটা গ্রুপ ১০টি দেশে ৩০০ মিলিয়ন গ্রাহককে টেলিযোগাযোগ সেবা দিচ্ছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোতে বেশিরভাগ মালিকানা রয়েছে আজিয়াটার।

মালয়েশিয়ায় ‘সেলকম’, ইন্দোনেশিয়ায় ‘এক্সএল’, শ্রীলঙ্কায় ‘ডায়ালগ’, বাংলাদেশে ‘রবি’, ক্যাম্বোডিয়ায় ‘স্মার্ট’, নেপালে ‘এনসেল’ এবং কৌশলগত অংশীদার হিসাবে ভারতে ‘আইডিয়া’ ও সিঙ্গাপুরে ‘এম ওয়ান’ নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে আজিয়াটা।