শুক্রবার বিটিআরসি কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ ও এইচএসবিসি বাংলাদেশের ডেপুটি সিইও মাহবুব উর রহমান চুক্তিতে সই করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “১৫৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো যা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ১৪০০ কোটি টাকার এই ঋণের ইন্টারেস্ট রেট এক দশমিক ৫১ শতাংশ। ঋণ শোধের সময় ১২ বছর এবং ২০ কিস্তিতে এ ঋণ শোধ করতে হবে।”
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মাণ, সিস্টেম ক্রয় ও গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণে এই অর্থ ব্যয় করা হবে বলে তিনি জানান।
এতো কম সুদে বাংলাদেশ এই প্রথম ঋণ পাচ্ছে দাবি করে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “এই ঋণ জোগাড়ে কিছুটা সময় লেগেছে, কম সুদে ঋণ পেতে এই সময় লেগেছে।
“স্যাটেলাইট নির্মাণ, গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি, ইন্সুরেন্স, আকাশে উড়ার পর আগামী তিন বছরের জন্য আনুষাঙ্গিক খরচ এ ঋণের মধ্যে রয়েছে।”
২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের আশা প্রকাশ করে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, “নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি শেষ করতে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে।”
প্রকল্পটির কাজের পর্যায়ক্রমিক অগ্রগতি সবার সামনে তুলে ধরা হবে বলেও প্রতিমন্ত্রী জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফি ওবের ও বিটিআরসি ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর এই উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ সেবা পরিচালনার জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারণ করা হয় ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর।
কৃত্রিম এই উপগ্রহ উৎক্ষেপণ প্রকল্পের জন্য একই বছর ৩১ ডিসেম্বর ২১৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় রাশিয়ার কাছ থেকে ‘অরবিটাল স্লট’ ইজারা নেওয়ার প্রস্তাবের অনুমোদন দেয় সরকার।
২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণে ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর পর ১১ নভেম্বর ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের জন্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কিনতে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান থ্যালেস এলিনিয়া স্পেসের সঙ্গে চুক্তি করে বিটিআরসি।
‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের পর বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ বছরে ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছে সরকার।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে, যার ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে এবং বাকিগুলো ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।
উৎক্ষেপণের পর ‘ট্রান্সপন্ডার লিজের’ মাধ্যমে বছরে ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে এবং ছয় থেকে সাত বছরের মধ্যে বিনিয়োগের অর্থ তুলে নেওয়া যাবে বলে আশা করছে সরকার।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের জন্য গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।