প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সম্মতি পেল রবি-এয়ারটেল

একশ কোটি টাকা মাশুলে বাংলাদেশের দুই মোবাইল ফোন অপারেটর রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হওয়ার প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2016, 09:01 AM
Updated : 1 August 2016, 09:01 AM

এর ফলে দুই কোম্পানি একীভূত হয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল সেবাদানকারী কোম্পানি গঠনের প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়ে গেল বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কর্মকর্তারা।

পরবর্তী প্রক্রিয়ায় দুই অপারেটরকে উচ্চ আদালতের কোম্পানি ম্যাটার বেঞ্চে যেতে হবে। সেখানে দুই অপারেটরের দেনা-পাওনার বিষয়টি সমাধান হবে। কারও কোনো আপত্তি না থাকলে সেখান থেকে অনুমতি পাওয়ার পর বিটিআরসি এ বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে।

বর্তমানে ভারত সফরে থাকা ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সোমবার টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রবি ও এয়ারটেল একীভূত হতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ যে মাশুল নির্ধারণ করেছিল- তাতে এবং এই প্রক্রিয়ার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সোমবার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।”

গত ১৩ জুলাই অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দুই কোম্পানির তরঙ্গ একীভূত করার ফি এবং মার্জার ফি বা মাশুল নির্ধারণ করা হয়।

ওই সভায় উপস্থিত টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বিটিআরসি কর্মকর্তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, দুই অপারেটর একীভূত হতে ১০০ কোটি টাকা মাশুল নির্ধারণ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে।

তরঙ্গ একীভূত করতে ৫০৭ কোটি টাকা গুণতে হতে পারে জানিয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, বিষয়টি চূড়ান্ত হবে এয়ারটেলের কী পরিমাণ টুজি তরঙ্গ একীভূত করবে রবি- তার ওপর।

বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, ২০১১ সালে টুজি লাইসেন্স নবায়নে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের যে মূল্য ছিল তা হিসাব করেই একীভূত তরঙ্গ মূল্যে ৫০৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫ মেগাহার্টজ থ্রিজি তরঙ্গ একীভূত করতে কোনো ফি দিতে হচ্ছে না।

বর্তমানে রবির হাতে ১৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ এবং এয়ারটেলের ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। এয়ারটেলের টুজি লাইসেন্সের মেয়াদ আছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। একীভূত হওয়ার পর যা হবে ৩৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ।

বর্তমানে গ্রামীণফোনের হাতে ৩২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে, যা এককভাবে অন্য সব অপারেটরের চেয়ে বেশি।

রবি ও এয়ারটেলের ব্যবসা এক হওয়ার পর একীভূত কোম্পানি রবি নামেই চলবে। এক কোম্পানি হলে রবির গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়াবে চার কোটির বেশি, যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক-চতুর্থাংশ। পাঁচ কোটির বেশি গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোন আছে সবার উপরে।

দুই অপারেটরের ব্যবসা একীভূত করতে ২৮ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর তা বিটিআরসিকে জানানো হয়। এ নিয়ে শুনানি করে বিটিআরসি কয়েকটি সুপারিশসহ মূল্যায়ন পাঠায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে।

সুপারিশে বলা হয়, এয়ারটেল তাদের থ্রিজি লাইসেন্সের মেয়াদ, অর্থাৎ ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাদের ২৫ শতাংশ মালিকানা বিক্রি করতে পারবে না।

রবির মালিকানা মালয়েশিয়াভিত্তিক আজিয়াটা গ্রুপের। অন্যদিকে এয়ারটেলের মালিক ভারতের ভারতি এয়ারটেল; তারা ওয়ারিদের ব্যবসা বাংলাদেশে কিনে নিয়েছিল।

এশিয়ার বড় টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিয়াটা অন্যতম। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পাশাপাশি কম্বোডিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুরেও তাদের ব্যবসা রয়েছে।