একীভূত রবি-এয়ারটেল: ‘শত কোটি টাকা’ মাশুল নির্ধারণ

মোবাইল অপারেটর রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হতে একশ কোটি টাকা মাশুল নির্ধারণ করে দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2016, 03:37 PM
Updated : 13 July 2016, 03:37 PM

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসি’র একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য মিলেছে।

বুধবার অর্থমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বিষয়ে আমরা একটি সিদ্ধান্তে এসেছি। অর্থমন্ত্রণালয় থেকে এ সিদ্ধান্ত টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠিয়েছে।”

অবশ্য একীভূত হতে কী পরিমাণ অর্থ গুণতে হবে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

তারানা বলেন, “খুব শিগগির প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে এ প্রস্তাব পাঠানোর পর তা চূড়ান্ত হবে।”

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অর্থমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে তরঙ্গ একীভূত করার ফি এবং মার্জার ফি বা মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে।”

দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি অপেক্ষায় ছিল জানিয়ে বিটিআরসি প্রধান বলেন, “তরঙ্গ একীভূত করতে অর্থের পরিমাণ নির্ধারণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, অর্থমন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি’র কোন আপত্তি ছিল না, এক্ষেত্রে সবাই একমত আছে।”

একীভূত মাশুল একটি সহনীয় অর্থ নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এ সিদ্ধান্তে একীভূত হতে যাওয়া দুটি অপারেটর খুশি হবে বলেও তিনি জানান।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী এবং বিটিআরসি চেয়ারম্যান মাশুলের তথ্য দিতে রাজি না হলেও সভায় উপস্থিত টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বিটিআরসি কর্মকর্তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দুই অপারেটর একীভূত হতে ১০০ কোটি টাকা মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়ে।

তরঙ্গ একীভূত করতে ৫০৭ কোটি টাকা গুণতে হতে পারে জানিয়ে কর্মকর্তারা জানান, এক্ষেত্রে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে এয়ারটেলের কী পরিমাণ টুজি তরঙ্গ একীভূত করবে রবি।

বিটিআরসি’র একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০১১ সালে টুজি লাইসেন্স নবায়নে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের যে মূল্য ছিল তা হিসাব করেইে একীভূত তরঙ্গ মূল্যে ৫০৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ৫ মেগাহার্টজ থ্রিজি তরঙ্গ একীভূত করতে কোনো ফি দিতে হচ্ছে না।

বর্তমানে রবির ১৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ এবং এয়ারটেলের ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। এয়ারটেলের টুজি লাইসেন্সের মেয়াদ আছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। একীভূত হওয়ার পর যা হবে ৩৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ।

বর্তমানে গ্রামীণফোনের রয়েছে ৩২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ, যা অন্য সব অপারেটরের চেয়ে বেশি।

দুই অপারেটরের ব্যবসা একীভূত করতে ২৮ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর তা বিটিআরসিকে জানায়। এ নিয়ে শুনানি করে বিটিআরসি একীভূতকরণে কয়েকটি বিষয় সুপারিশ করে মূল্যায়ন পাঠায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে।

সুপারিশের মধ্যে রয়েছে এয়ারটেল তার থ্রিজি লাইসেন্সের মেয়াদ, অর্থাৎ ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাদের ২৫ শতাংশ মালিকানা বিক্রি করতে পারবে না।

দুই অপারেটরের ব্যবসা এক হওয়ার পর একীভূত কোম্পানি রবি নামেই চলবে। এক কোম্পানি হলে রবির গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়াবে চার কোটির বেশি, যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক-চতুর্থাংশ। পাঁচ কোটির বেশি গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোন আছে সবার উপরে।

রবির মালিকানা মালয়েশিয়াভিত্তিক আজিয়াটা গ্রুপের। অন্যদিকে এয়ারটেলের মালিক ভারতের ভারতি এয়ারটেল; তারা ওয়ারিদের ব্যবসা বাংলাদেশে কিনে নিয়েছিল।

এশিয়ার বড় টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিয়াটা অন্যতম। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পাশাপাশি কম্বোডিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুরেও তাদের ব্যবসা রয়েছে।