সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে তিনি জানিয়েছেন, দেশের বাইরে দূতাবাসগুলোতেও সিম নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে এবং জনগণকে আশ্বস্ত করতে নিজের সিম বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নিবেন। ৩০ এপ্রিলের মধ্যেই নিবেন।”
গত ডিসেম্বরে সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় আঙুলের ছাপ না দিয়ে এখন আর নতুন সিম কেনা যাচ্ছে না। পাশাপাশি পুরনো সিমও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুনঃনিবন্ধন করতে হচ্ছে; এ জন্য সময় দেওয়া হয়েছে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।
অবশ্য মোবাইল ফোন অপারেটরদের হাতে নাগরিকদের বায়োমেট্রিক তথ্য কতোটা নিরাপদ- তা নিয়ে জনমনে সংশয় আছে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নাগরিকদের আঙুলের ছাপ নিয়ে এই নিবন্ধন কার্যক্রমে আপত্তি জানিয়ে এক ব্যক্তি হাই কোর্টে রিট আবেদন করায় আদালত এ বিষয়ে একটি রুলও জারি করেছে।
এই সংশয় নিরসনে বিভিন্নভাবে জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাইছে সরকার। টেলিকম প্রতিমন্ত্রী নিজে প্রায় ২০ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে অন্য সবার মতো আঙুলের ছাপ দিয়ে নিজের সিম নিবন্ধন করেছেন।
মোবাইল অপারেটররা আঙুলের ছাপ সংরক্ষাণ করছে না জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন, কোনো কোম্পানি আঙুলের ছাপের অপব্যবহার করলে ৩০০ কোটি টাকা জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।
তারানা হালিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সিম পুনঃনিবন্ধনের মাধ্যমে জনগণ আবারও আশ্বস্ত হবে, আমরা কোনো আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করছি না। জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অবৈধ ভিওআইপি এবং মানুষের ক্ষতিকারক বিষয় বন্ধের জন্য নিজের সিমের মালিকানা নিজের স্বীকার করে নিতে হচ্ছে এবং ভেরিভিকেশন করাতে হচ্ছে।”
তারানা বলেন, ‘বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের’ ব্যবস্থা রাখার জন্য ইতোমধ্যে দূতাবাসগুলো চিঠি পাঠানো হয়েছে।
“সঙ্গে এনএইডিতে আমরা চিঠি লিখছি, কোনো কারণে যাদের আঙুলের ছাপ পাওয়া যাচ্ছে না, এনআইডির আঞ্চলিক অফিসে তারা যাবে, সেখানে যদি ডিভাইসগুলো থাকে, তাদের আর বেশি যেন ঘোরাঘুরি করতে না হয়, সেখানেই যেন ভেরিফিকেশনের কাজটি করে নিতে পারেন।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের নয় হাজারের বেশি ডাকঘরে বায়োমেট্রিক ডিভাইস রাখার নতুন একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সিম নিবন্ধনের জন্য প্রত্যেক ডাকঘরে অপারেটরও থাকবেন।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ডাকঘরে নিবন্ধন সেবা চালু করা সম্ভব হবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।
৩০ এপ্রিলের পর অনিবন্ধিত সিম মালিককে সতর্ক করতে প্রথমে কয়েক ঘণ্টা করে সিম বন্ধ করে রাখা হবে জানিয়ে তারানা বলেন, “এরপরও কেউ যখন নিবন্ধন করতে আসবেন না, তখন আমাদের ধরে নিতে হবে, এটি সেই সিমগুলো যেগুলো বিভিন্ন অন্যায় কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটার মালিকানা কেউ স্বীকার করে নিতে রাজি নন। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে সিমগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।”
এই নিবন্ধন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে যে ‘একটি ভালো কাজ’ হচ্ছে, সে বিষয়ে নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোনো গোষ্ঠী নয়, সব মানুষের লাভের জন্য এই উদ্যোগ।