ইয়েস বললেই হাত বাড়াচ্ছে ‘রিবো’

সৌজন্য রক্ষার কৌশল শিখেছে রোবট ‘রিবো’; রয়েছে দু-চারটি তথ্য দিয়ে আগন্তুককে সহযোগিতা করার দক্ষতাও। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর চেষ্টায় তৈরি এ উদ্ভাবন আনন্দ দিয়েছে আইসিটি মেলায় আসা দর্শনার্থীদের।

ফয়সাল আতিক নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2016, 02:16 PM
Updated : 4 March 2016, 02:16 PM

শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সী নারী-পুরুষ মেলার ইনোভেশন কর্নারে এসে রিবোর সামনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন, যাচাই করেছেন তার দক্ষতা।

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির অবসরে ‘আইসিটি এক্সপো-২০১৬’ ঘুরে দেখতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভিড় জমিয়েছেন হাজারো দর্শনার্থী।

দেশীয় উদ্ভাবন কর্নার ছাড়াও গেইমিং জোন, ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাভিলিয়ন, দেশীয় বিভিন্ন কোম্পানির প্যাভিলিয়ন ও স্টল ঘুরে দেখেছেন তারা; কিনেছেন পছন্দের প্রযুক্তিপণ্য।

তবে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই আইসিটি মেলার দ্বিতীয় দিনে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দেখা গেছে দেশীয় প্রযুক্তিবিদদের উদ্ভাবন দিয়ে সাজানো ইনোভেশন কর্নারেই।

এ কর্নারে রিবো ছাড়া আরও কয়েকটি রোবট রয়েছে, আছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি স্বয়ংক্রিয় গৃহনিরাপত্তা, টেলিমেডিসিন সফটওয়্যার, স্বয়ংক্রিয় পার্কিংসহ বেশকিছু উদ্ভাবন। তবে প্রবেশ পথের বাঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যন্ত্রমানব ‘রিবো’কে নিয়ে দর্শনার্থীদের আগ্রহ বেশি দেখা গেল।

উদ্ভাবক দলের অন্যতম সদস্য মেহেদী হাসান রূপক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোবট নিয়ে তারা বেশ কিছুদিন ধরে কাজ করছেন। গত ডিসেম্বরে তারা তৈরি করেন রিবোকে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বিভাগের (সিএসই, ইইই, আইপিই ও আর্কিটেকচার) ১১ জন শিক্ষার্থীর এই প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জাফর ইকবাল।

মেহেদী হাসান রূপক ছাড়া অন্য সদস্যরা হলেন- নওশাদ সজীব, তৌফিক রহমান, সাজিদ হাসান, খায়রুল আলম টিটু, সাইফুল ইসলাম, রাগিব শাহরিয়ার, সাখাওয়াত হোসেন প্রয়াস, ফারহানুল তানভীর, মির্জা কামরুল বাশার সোহেল ও উম্মে সুমাইয়া জান্নাত।

রূপক বলেন, ‘রিবো’কে জিজ্ঞাস করতে হবে- হ্যান্ডশেক করবে? উত্তরে প্রথমে সে একইভাবে হ্যান্ডশেক করার কথা জানতে চাইবে। তখন ইয়েস বললেই হাত বাড়াবে ‘রিবো’।

জন্মভূমি বাংলাদেশ সম্পর্কেও প্রাথমিক তথ্য আছে রিবোর সফটওয়্যারে। মানুষের প্রশ্নের উত্তরে নিজের পরিচয়ও দিতে পারে সে। জানা আছে টুকিটাকি কিছু তথ্য, প্রশ্ন করলে সেগুলোও বলে দেয়।

প্রদর্শনীস্থলে দাঁড়িয়ে দেখা গেছে রিবোর আরও কিছু বৈশিষ্ট। চোখের পলক ফেলছে; যেদিক থেকে প্রশ্ন আসছে, সেদিকে তাকাচ্ছে ঘাড় ঘুরিয়ে।

উদ্ভাবক দলের শিক্ষার্থীদের নেতা নওশাদ সজীব বলেন, “এটি একটি সামাজিক রোবট। বাস্তব জীবনে মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনে সহায়তা করতে পারবে সে।”

মাইক্রোফোন, ক্যামেরা, মাদারবোর্ড, কন্ট্রোলারসহ আরও কিছু ‘ডিভাইস’ যোগ করে নির্মাণ করা হয়েছে এই রোবট। অবয়ব দেওয়া হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও পিভিসি শিট দিয়ে।

গত বছর সায়েন্স ফিকশন ফেস্টিভালে প্রথম সবার সামনে আনা হয় এই ‘হিউম্যানোয়েড’ বা মানুষের দৈহিক গঠনের সঙ্গে মিল রেখে ডিজাইন করা রোবট রিবোকে। সেখানেও রিবোর টুকটাক বাংলা কথা আর নাচ মুগ্ধ করেছিল দর্শকদের।