কলড্রপে ক্ষতিপূরণের তথ্য এসএমএসে দিতে হবে: তারানা

মোবাইল ফোন অপারেটরদেরকে কলড্রপের ক্ষতিপূরণের তথ্য এসএমএস করে গ্রাহকদের দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2016, 11:41 AM
Updated : 28 Jan 2016, 12:56 PM

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।

কলড্রপে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা দেওয়ার পর মোবাইল ফোন অপারেটররা তা কার্যকর করেছে কি না-জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী তারানা বলেন, নির্দেশনা পাঠানোর পরই তা কার্যকর হয়েছে।

আইটিইউ (আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা) বেঁধে দেওয়া কলড্রপ মান অনুযায়ী কলড্রপে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গ্রাহক অভিযোগ জানালে সে অনুযায়ী বিটিআরসি কলড্রপ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করবে।

তিনি বলেন, “ক্ষতিপূরণের বিষয়ে গ্রাহককে জানাতে হবে, গ্রাহক এ বিষয়ে জানতে না পারলে মনে করে তারা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না। তাদের এসএমএস করে জানাতে হবে। জবাবদিহিতা থাকতে হবে, নইলে গ্রাহক মনে করে এখানে কোনো ফাঁক আছে, আমরা কোনো ফাঁক রাখতে চাই না।”

বিটিআরসি’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিটিআরসি ও আইটিইউ নির্ধারিত মান অনুযায়ী, কলড্রপের হার ৩ শতাংশের কম হলে তা হবে মানসম্পন্ন সেবা।

বৈঠকের পর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী শাহজাহান মাহমুদ জানান, মোবাইল ফোনে প্রতি কলড্রপে এক মিনিট করে ক্ষতিপূরণ দিতে অপারেটরগুলো নির্দেশনা পালন করছে কিনা- সে বিষয়ে নজরদারি করা হচ্ছে।

কলড্রপের ক্ষতিপূরণ দিতে গত ১৯ জানুয়ারি অপারেটরদের ওই নির্দেশনা পাঠায় বিটিআরসি।

গ্রাহকদের কাছ থেকে কলড্রপ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, শুধু কলড্রপ নয়, বিটিআরসি ‘কোয়ালিটি অব সার্ভিস’ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। গ্রাহক সন্তুষ্টিতে প্যারামিটার আছে, একটি কল সেন্টার করা হচ্ছে। গ্রাহকরা সেই কল সেন্টারে অভিযোগ জানাতে পারবে। খুব শিগগিরই তা হবে।

শিগগিরই একটি ‘শর্টকোড’ চালু করে গ্রাহকদের অভিযোগ নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।

টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন না হলেও প্রতি সপ্তাহে গ্রাহককে জানাতে হবে তার কত কলড্রপ হয়েছে এবং কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ তাকে দেওয়া হয়েছে।

অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির বলেন, “কলড্রপের ক্ষতিপূরণ বিষয়ে বিটিআরসির সাথে আলোচনা হয়েছে। প্রতিমাসে অপারেটররা বিটিআরসিতে রিপোর্ট করে।”

কলড্রপসহ মোবাইল ফোন গ্রাহকদের নানা ভোগান্তির প্রেক্ষাপটে তা নিরসনে গত অগাস্টে বাংলাদেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে দুই মাস সময় বেঁধে দেন প্রতিমন্ত্রী।

কলড্রপ সমস্যার সমাধান করতে না পারলে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান বা গ্রাহকদের টকটাইম ফেরৎ দেওয়া যায় কি না, তাও খতিয়ে দেখতে সে সময় বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন তারানা।

২০১৪ সালে বাংলাদেশের কয়েকটি অপারেটর পরীক্ষামূলকভাবে কলড্রপে ক্ষতিপূরণের সুবিধা চালু করে ব্যাপক প্রচার চালালেও পরে কোনো ঘোষণা ছাড়াই তা বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে সরকারের মন্ত্রীরাও পরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

প্রতিবেশী দেশ ভারতে গত বছর প্রতিটি কলড্রপের জন্য গ্রাহকদের এক রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে।