এক মিনিটেই হবে আন্তঃব্যাংক চেক লেনদেন

এখন থেকে এক মিনিটেই সম্পন্ন হবে এক লাখ বা তার বেশি অঙ্কের টাকার যে কোনো চেকের আন্তঃব্যাংক লেনদেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2015, 10:25 AM
Updated : 29 Oct 2015, 10:27 AM

বাংলাদেশ ব্যাংক রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) নামের নিকাশ ব্যবস্থা চালু করায় আন্তঃব্যাংক লেনদেন প্রক্রিয়ায় এ গতি এসেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান দেশের নিকাশ ব্যবস্থার এই নতুন সংস্করণ উদ্বোধন করেন।

প্রাথমিকভাবে দেশের ৫৫টি ব্যাংকের প্রায় ৫ হাজার শাখা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এই ব্যবস্থায়, যাতে স্থানীয় মুদ্রার পাশাপাশি পাঁচটি বিদেশি মুদ্রার লেনদেনও হবে।

শুধুমাত্র রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এই ব্যবস্থার আওতার বাইরে রয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশ অটোমেটেটেড ক্লিয়ারিং হাউজের (বিএসিএইচ-ব্যাচ) আওতায় এক লাখ বা তার বেশি অঙ্কের টাকার চেকের আন্তঃব্যাংক লেনদেন হতে কমপক্ষে একদিন সময় লাগত।

ক্লিয়ারিং হাউজে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের চেক সকালে জমা দিলে ওই চেকের অর্থ জমাকারী ব্যাংকের হিসাবে আসতে বিকাল হয়ে যেত। আর বিকালে জমা দিলে পর দিন দুপুর পর‌্যন্ত লেগে যেত।

আরটিজিএস চালু হওয়ায় এখন জমাকারী ব্যাংক চেকের ইমেজ কপি জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অর্থ প্রদানকারী ব্যাংকের হিসাব থেকে সরাসরি জমাকারী ব্যাংকের হিসাবে অর্থ চলে আসবে।

এর আগে ব্যাচের মাধ্যমে দুধরনের চেকের নিকাশ ব্যবস্থা চালু ছিল; রেগুলার ভ্যালু চেক, যার পরিমাণ ৫ লাখ টাকার কম এবং হাই ভ্যালু চেক, যার পরিমাণ ৫ লাখ টাকার বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাচের মাধ্যমে দৈনিক গড়ে দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকার রেগুলার ভ্যালু চেক এবং দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকার হাই ভ্যালু চেকের লেনদেন হয়।  

আরটিজিএস চালু হওয়ায় এখন থেকে এক লাখ টাকার চেকও হাই ভ্যালু চেক হিসেবে বিবেচিত হবে।

এই আধুনিক লেনদেন ব্যবস্থা স্থাপনে বাংলাদেশ ব্যাংককে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।  এডিবি ২০১৩ সালের জুলাই মাসে এক চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ডলার অনুদান দেয়। ২০১৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় নির্ধারিত হয়েছিলো চুক্তিতে।

উদ্বোধনী বক্তৃতায় গভর্নর বলেন, “আরটিজিএস চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশের লেনেদেন ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে গেল। এতে লেনদেন প্রক্রিয়া যেমন দ্রুত হবে, তেমনি স্বচ্ছও হবে।”

এই ব্যবস্থা ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সবচে উপকৃত হবেন ব্যবসায়ীরা। আর ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনাও নতুন মাত্রা পাবে।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা, নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে শামসী তাবরেজ, আরটিজিএস ব্যবস্থার সলিউশন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সিএমএ স্মল সিস্টেম এবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এলেক্সি নাজারভ বক্তব্য রাখেন।

বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ক্লিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।