কলড্রপ সমস্যা সমাধানে মোবাইল অপারেটরদের দুই মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
Published : 19 Oct 2015, 09:35 PM
এ সময়ের মধ্যে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতেও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
গ্রাহকদের কলড্রপসহ নানা ভোগান্তির প্রেক্ষাপটে সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশের মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের বৈঠকে ডাকেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কলড্রপ, থ্রিজি সার্ভিসের সমস্যা, ইন্টারনেটের দাম বেশি, অযথা টাকা কেটে নেওয়া, আনলিমিটেড প্যাকেজ বলে টাকা কেটে নেওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা এখনও প্রকট রয়েছে।
“কলড্রপ নিয়ে আগেও আলোচনা করেছি। সে ইস্যু এখনও রয়েছে। এত দিন সময় লাগার তো কথা নয়।”
কলড্রপের বিষয়টিতে আইজিডব্লিউ, আইসিএক্স, এনটিটিএন সার্ভিসগুলোও জড়িত রয়েছে বলে প্রতিমন্ত্রীকে বলেন অপারেটরগুলোর কর্মকর্তারা।
আইজিডব্লিউ, আইসিএক্স, এনটিটিএন এর সঙ্গে বৈঠক করা হবে জানিয়ে তারানা বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে অপারেটররা কলড্রপ সমস্যার সমাধানে কী উদ্যোগ নিয়েছে, তা জানাতে হবে। কলড্রপের বিষয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে একটা সমাধানে আসতে হবে।”
সম্প্রতি ভারতের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রতিটি কলড্রপের জন্য গ্রাহকদের এক রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা দেয়।
কলড্রপের জন্য বাংলাদেশের অপারেটররা গ্রাহকদের কল মিনিট ফেরত দেবে না ক্ষতিপূরণ দেবে- তা জানাতে বলেছেন প্রতিমন্ত্রী।
“ভারতে সম্প্রতি প্রতি কলড্রপে এক রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা এসেছে। আপনারা ক্ষতিপূরণ দিবেন, না এ সমস্যা সমাধান করবেন, তা জানাতে হবে।”
প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে গ্রামীণফোনের সিইও রাজিব শেঠি, বাংলালিংকের সিইও জিয়াদ সিতারা, রবির সিইও সুপন বীরাসিংহে,সিটিসেলের সিইও মেহবুব চৌধুরী, এয়ারটেলের সিইও পিডি শর্মা, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত বিটিআরসির মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমদাদ উল বারী বলেন, বিটিআরসির গাইডলাইনে কলড্রপের স্ট্যান্ডার্ড, প্যাকেজের বিষয়গুলো উল্লেখ রয়েছে। তবে সব অপারেটর এখনও পুরোপুরি চালু করতে পারেনি।
কলড্রপ সমস্যা সমাধান করতে না পারলে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান বা গ্রাহকদের সে সময় ফেরৎ দেওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে বিটিআরসিকে বলেন প্রতিমন্ত্রী।
থ্রিজির নামে যেন ২জি ইন্টারনেট গতি দেওয়া না হয়, রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত যেন কোনো প্রমোশনাল এসএমএস না দেওয়া হয়, অফার দিয়েই টাকা কেটে নেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে সতর্ক হতেও অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানান তারানা।
টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, “অনেক সময় দেখা যাচ্ছে অফার দিয়েই টাকা কাটা শুরু হয়, অপারেটররা যে শর্তে প্যাকেজ দিবেন, সেই শর্ত অনুযায়ী সেবা দিবেন এবং টাকা নিবেন, নইলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বর্তমানে বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটকসহ মোট ছয়টি অপারেটর রয়েছে।
বিটিআরসির হিসাবে, গত অগাস্ট শেষ নাগাদ ১৬ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে মানুষের হাতে থাকা মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৩ কোটি ছাড়িয়েছে; ইন্টারনেট সেবা নিচ্ছেন সোয়া ৫ কোটি গ্রাহক।
বিটিআরসি ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবীব খান, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারাও এই বৈঠকে ছিলেন।