দুটি মোবাইল অপারেটরের একীভূত হওয়ার উদ্যোগ, নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তনের খবর, সিম কার্ড নতুন করে নিবন্ধন-দেশের টেলিকম খাতের এরকম নানা খবরের মধ্যে এই খাতের সবচেয়ে বড় কোম্পানি গ্রামীণফোনের শেয়ারের দর ক্রমাগত পড়ছেই।
Published : 08 Oct 2015, 09:13 PM
কোম্পানিটির অর্ধবার্ষিক মুনাফা কমে যাওয়া শেয়ার দরে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন একজন বিশেষজ্ঞ।
গত একমাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে গ্রামীণফোনের শেয়ার দর কমেছে সাড়ে ১৭ শতাংশ; যে কারণে কোম্পানিটির বাজার মূলধন কমেছে সাত হাজার কোটি টাকারও বেশি।
৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৫৫ টাকা কমে বৃহস্পতিবার দিনশেষে গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২৬০ টাকায়।
দরপতনের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুনিরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রবি ও এয়ারটেলের একত্রিত হওয়ার খবরে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা ভয় পেয়েছে।”
আইডিএলসি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের শীর্ষস্থানীয় মার্চেন্ট ও ব্রোকারেজ হাউজ।
ব্যবসা একীভূত করতে রবি ও এয়ারটেলের প্রস্তাবে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
এদিকে আগামী পাঁচ/ছয় মাসের মধ্যে মোবাইল ফোনের নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদলানোর সুযোগ আসবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তার প্রভাবও গ্রামীণফোনের শেয়ারে পড়েছে বলে মনে করেন মুনিরুজ্জামান।
“নম্বর স্থির রেখে অপারেটর বদলের বিষয়টিকে আমলে নিয়েছে বিনিয়োগকারীরা। যদি গ্রামীণফোনের কিছু কাস্টমার অন্য অপারেটরে চলে যায় তাতে গ্রামীণফোনের মুনাফায়ও প্রভাব পড়বে।”
চলতি বছরের ছয় মাসে আগের বছরের তুলনায় গ্রামীণফোনের মুনাফা ১০ কোটি টাকা কমে হয়েছে ১ হজার ৪৮ কোটি টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গ্রামীণফোনের শেয়ার বাজারে বাড়তি দামে লেনদেন হচ্ছিল।
“এছাড়া কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারেনি। এর ফলে অনেক বিনিয়োগকারী গ্রামীণফোনের শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। বিক্রির চাপে শেয়ারের দরেরও পতন হচ্ছে।”
বিক্রির চাপে ঢাকার পুঁজিবাজারে গ্রামীণফোনের আরএসআই (রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইনডেক্স) ১০ এর নিচে নেমে এসেছে। সাধারণত আরএসআই ৩০ এর নিচে নামা মানে অতিরিক্ত বিক্রি বোঝায়। এর অর্থ, গ্রামীণফোনের শেয়ার মালিকরা পড়িমরি করে শেয়ার বেচে দিচ্ছেন।
২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা তুলে নেয় গ্রামীণফোন; যার প্রায় ৫৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে নরওয়েভিত্তিক টেলিনর এর কাছে।
২০১৩ সালের নভেম্বরে ১৮০ টাকা দাম ছিল কোম্পানিটির শেয়ারের। পরের বছর অক্টোবরে ১২২ শতাংশ বা ২২২ টাকা বেড়ে শেয়ারের দাম হয় ৪০০ টাকা।
এরপরের ডিসেম্বর থেকে গত ৮ সেপ্টেম্বর নাগাদ ৩৬০ থেকে ৩২০ টাকায় ওঠানামা করে গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম।