ভারতে পাট রপ্তানির বাধা তোলার আহ্বান ঢাকার

বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে আরোপিত বাধা প্রত্যাহারে নয়া দিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।

নয়া দিল্লি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2015, 06:40 PM
Updated : 6 Oct 2015, 11:52 AM

বুধবার ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের সঙ্গে তার দপ্তরে এক বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ আহ্বান জানান।

সম্প্রতি ভারত সরকার পাট আমদানিতে কঠিন শর্ত আরোপ করায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাট ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

গত মাসে ভারতের বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের জুট কমিশনারের কার্যালয়ের জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনে ভারতীয় আমদানিকারকদের নতুন ফরমেট করা ফরম দিয়ে নতুনভাবে রেজিস্ট্রেশন নিতে বলা হয়।

এ বিষয়ে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সব আমদানিকারকের আগে থেকেই আমদানি-রপ্তানি লাইসেন্স থাকলেও ওই প্রজ্ঞাপনে প্রতি চালান আমদানির আগে জুট কমিশনারের কার্যালয় থেকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) নিতে বলা হয়।”

দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

প্রায় সব পণ্যের কোটা ও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার ভারতের প্রতিশ্রুতি থাকলেও এখনও বিভিন্ন পণ্যের উপর যে শুল্ক রয়েছে, তা তুলে নিতে আহ্বান জানান বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী।

“ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী দ্রুত বিষয়টির সমাধান করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন,” বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন তোফায়েলের সফরসঙ্গী এক কর্মকর্তা।

আন্তঃদেশীয় যোগাযোগের সুফল পেতে ভারতীয় অংশের সড়ক নির্মাণ দ্রুত করতেও দেশটির সরকারের প্রতি তাগিদ দেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী।

তোফায়েল বলেন, “নাইরোবিতে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১০ মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে আমরা সেবা খাতের বাণিজ্যে ছাড় এবং বালি সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রুলস অব অরিজিনের (শুল্কমুক্ত বা যে কোনো অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধার আওতায় রপ্তানি পণ্যের কাঁচামালের উৎস সম্পর্কে বিভিন্ন শর্ত) পরিবর্তন চাইব। এলডিসির সমন্বয়ক হিসেবে আমরা ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পরে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য রপ্তানির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সময় বাড়াতে বলব।”

ভারতীয় বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এ অবস্থানের প্রতি তার সরকারের সমর্থনের আশ্বাস দেন।

বুধবার শেষ হওয়া তিন দিনব্যাপী সাউথ এশিয়ান ইকোনমিক কনক্লেভে যোগ দিতে নয়া দিল্লি যান তোফায়েল।

আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ভারত সরকারের সহায়তায় কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) এ সম্মেলনের আয়োজন করে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবার জন্য প্রবৃদ্ধির পথ খুঁজতে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা, বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

এর আগে কনক্লেভে বক্তব্যে আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং দেশগুলোর জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন তোফায়েল আহমেদ।