নিবন্ধনহীন সিম বন্ধে তোড়জোড়

অবৈধ সিম বিক্রি বন্ধে অভিযান শুরু করার পর এবার গ্রাহকের হাতে থাকা মোবাইল সিমের নিবন্ধন শতভাগ নিশ্চিত করতে তোড়জোড় শুরু করেছে সরকার। নানা নির্দেশনার পাশাপাশি অনিবন্ধিত সিমের জন্য অপারেটরদের জরিমানার বিধানও ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

শামীম আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2015, 07:10 PM
Updated : 8 Sept 2015, 07:13 PM

মোবাইলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকারের এমন অবস্থান বলে জানা গেছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘অবৈধ’ সিমের বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সব সিম পুনঃনিবন্ধন করার উদ্যোগ নিতে বিটিআরসিকে আজ (মঙ্গলবার) সকালে চিঠি পাঠানো হয়েছে।”

একদিন আগেও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোসের কণ্ঠে ‘কিছুটা ছাড়ের’ কথা শোনা গিয়েছিল।

তিনি বলেছিলেন, একবার নিবন্ধন করে থাকলে পুনঃনিবন্ধনের প্রয়োজন পড়বে না।

তবে প্রতিমন্ত্রী তারানা বলেন, “তারা (বিটিআরসি) নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলেন, সেই চিঠি আজ পাঠানো হয়েছে। গত তিন মাস ধরে সিম পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়া চলছে এবং যারা সম্প্রতি সঠিকভাবে সিম নিবন্ধন করেছে তারাও এর আওতায় আসছে।

“যারা সম্প্রতি সঠিকভাবে নিবন্ধন করেছেন তাদেরও পুনঃনিবন্ধন করতে হবে, আমি মনে করি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা স্বার্থে, চাঁদাবাজি বন্ধের স্বার্থে জনগণ এতে সহায়তা করবেন।”

সুনীল কান্তি বোস

বিটিআরসিকে দেওয়া ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, “অপারেটরদের ক্ষুদে বার্তা দিয়ে গ্রাহকের কাছে এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দিতে হবে আপনার নিবন্ধনকৃত সিম বা অনিবিন্ধিত সিম ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে পুনরায় নিবন্ধন করুন; নতুবা তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

গত বছর মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর অনিবন্ধিত সব সিম বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট।

নিবন্ধনের বিষয়ে কড়াকড়ির পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের পর অনিবন্ধিত সিম পাওয়া গেলে এর জরিমানা অপারেটরকেই গুণতে হবে বলেও জানান তারানা।

তিনি বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সার্ভারে অপারেটরদের প্রবেশের সুযোগ দিতে বিটিআরসিকে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। এ সুযোগ পাওয়ার পর অপারেটররা যাচাই করে অনিবন্ধিত সিম বন্ধ করতে পারবে।”

জরিমানার বিষয়ে মোবাইল ফোন অপারেটরদের চিঠি দেওয়া হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যে চিঠি দেব সেখানে জানিয়ে দেওয়া হবে নির্ধারিত সময়ের পরে অর্থ্যাৎ নির্বাচন কমিশনের সাথে তারা চুক্তি করার পর এবং এনআইডি সার্ভারে প্রবেশের সুযোগ পাওয়ার পরও যদি বাজারে অবৈধ সিম পাই, সেক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী তাদের প্রতিটি সিমের জন্য ৫০ ডলার করে জরিমানার বিধান রয়েছে, তা প্রযোজ্য হবে।”

গত ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর থেকে মোবাইল ফোন অপারেটররা প্রি-একটিভ সিম (আগে থেকেই চালু) বিক্রি করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।

এসব সিমপ্রতি ৫০ ডলার জরিমানার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল। তবে তিন বছরেও তা কার্যকর হয়নি।

বেশিরভাগ অপারেটর সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করছে না এবং অনেকক্ষেত্রে অনিবন্ধিত সিম বিক্রির দায় অপারেটরা সিম বিক্রির রিটেইলাদের উপর চাপিয়ে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

অবৈধ সিম বন্ধে যে অভিযান চলছে তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী।

বাংলাদেশে ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটর রয়েছে। বিটিআরসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই নাগাদ বাংলাদেশে মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৮৭ লাখ।