রাজস্ব আদায়ে সমন্বয় আনা ও আধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করাসহ বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলোর কথা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বিকালে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের চাহিদা বিবেচনায় দেশের অর্থনীতির কাঠামোকে আরও সুদৃঢ় করতে ব্যবসা ও বিনিয়োগবন্ধব বাজেট প্রণয়নের চেষ্টা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার অবাস্তব নয়। তবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা জরুরি।
“বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ হলো- সুশাসন, যথাযথ মনিটরিং, বিনিয়োগ ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায়।”
তবে একটি বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। প্রাক-বাজেট আলোচনায় মহামারী পরিস্থিতি ও আদায়ের জটিলতার কথা উল্লেখ করে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছিল এফবিসিসিআই।
বাজেটে এর প্রতিফলন না দেখে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
“৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ব্যবসায়িক খরচ বাড়িয়েছে। আমরা এটা বিলুপ্তির প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু বাজেটে এর প্রতিফলন নেই। অগ্রিম আয়কর যথাযথ সমন্বয় ও রিফান্ড না হওয়ায় ব্যবসার ব্যয় বাড়ে, পদ্ধতিগত জটিলতা সৃষ্টি করে,“ বলেন তিনি।
বাজেটে মহামারী মোকাবেলায় অর্থনৈতিক পুর্নগঠন, টিকাদান ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম জোরদারকরণ, কৃষি, খাদ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং কর্মসংস্থানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এসব পদক্ষেপকে বাজেটের ইতিবাচক হিসাবে চিহ্নিত করেন তিনি।
অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বিনিয়োগ, শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে। এসব অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) আরও ভূমিকা রাখবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি রাখা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে সরকার এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেবে। এর মধ্যে ব্যাংক ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা নেবে।
ঘাটতি মেটাতে স্থানীয় ব্যাংক ব্যবস্থার পরিবর্তে স্বল্প সুদে বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার পরামর্শ দেন জসিম।
“যথাসম্ভব সূলভ সুদে বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়নের প্রচেষ্টা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। যথাযথ বিনিয়োগ ও শিল্পোন্নয়ন ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারাকে অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়।”