চরের জন্য বরাদ্দ কাজে লাগাতে হবে: স্পিকার

চলতি বাজেটে চরের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ অব্যবহৃত থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে এরপর থেকে এ অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2015, 06:38 PM
Updated : 6 June 2015, 06:38 PM

শনিবার রাজধানীর খামার বাড়িতে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় চর সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে চরের জন্য দেওয়া ৫০ কোটি টাকার মধ্যে এক টাকাও ব্যবহার হয়নি জানিয়ে তাতে উষ্মা প্রকাশ করেন স্পিকার।

শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, “অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য কমানোর জন্যও কাজ করছি। এটা সারা বিশ্বেও আলোচিত একটি ইস্যু।

“২০১৮ সাল নাগাদ বাংলাদেশে অতি দারিদ্র্য থাকবে না। এটা কিন্তু অনেক বড় প্রত্যয়ের কথা, আশার কথা, যে ধারায় উন্নয়ন এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে ২০১৮ সালে আর অতি দারিদ্র্য থাকবে না।

“তাহলে পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর যারা চরে থাকেন, হাওড়ে থাকেন-এর সাথে দরিদ্র নারী-শিশুসহ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের উন্নয়ন ২০১৮ সালের মধ্যেই ঘটবে।”

চলতি অর্থবছরে চরের জন্য দেওয়া বরাদ্দ অর্থ ব্যয় না হওয়ায় অসন্তোষ জানিয়ে তিনি বলেন, “গত বছরের ৫০ কোটি টাকা অব্যবহৃত কেন, এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। বরাদ্দ যেন বিশেষ পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারি, এর সুফল যেন চরাঞ্চলের মানুষকে পৌঁছে দিতে পারি।

“পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এই বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সেশনে যে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উঠে আসবে, সেগুলোকে টেকসই করতে হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে প্রথম চর সম্মেলন জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, “প্রতিটি চরের পরিস্থিতি আলাদা। ইন্টারনেট যোগাযোগের ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেটা চিন্তা করতে হবে। সব উপজেলাকে কানেক্টিভিটির আওতায় আনলে এটা বাস্তবায়িত নাও হতে পারে।

“গত বাজেটে শেষদিকে চরের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এক টাকাও খরচ করতে পারেনি।

“আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, যদি প্রোপোজাল তৈরি করতে পারেন, তাহলে কোন একটা বিভাগে বা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করিয়ে দেব।”

ইব্রাহিম খালেদ বলেন, “চরে মানবউন্নয়ন করতে হলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে। ৩-৪ বা ৫ বছর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কর্মসূচি সফলভাবে করতে পারলে জনগণ নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য বদলাতে শুরু করবে।”

অনুষ্ঠানে চরবাসীর পক্ষে দেওয়া বক্তব্যে মনীন্দ্র নাথ রায় বলেন, “চরের মানুষ জীবনের শুরুতে সংগ্রাম শুরু করেন। মৃত্যু পর্যন্ত সংগ্রামই করে যান।”

বর্তমানে চরবাসীর সংখ্যা প্রায় পৌনে এক কোটি জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এদেরকে মূল স্রোতধারায় আনতে হবে।”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশনের কাউন্সিলর প্রিয়া পাওয়েল, কনসার্ন ওয়াল্ডওয়াইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর একেএম মুসা, অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের সেক্রেটারি জেনারেল শিশির শীল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।