জরাজীর্ণ দশায় রাঙ্গামাটির গৌর নিতাই আশ্রম

আশ্রমে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটিরও নড়বড়ে অবস্থা। সড়কের তল থেকে মাটি সরে গেছে অনেক জায়গায়।

অজয় মিত্রঅজয় মিত্র
Published : 7 Oct 2022, 12:39 PM
Updated : 7 Oct 2022, 12:39 PM

পার্বত্য শহর রাঙ্গামাটি সদরের তবলছড়িতে ১৯৩৩ সালে রাম জীবন চাকমার হাতে প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রী শ্রী গৌর নিতাই আশ্রম। এখন উৎসব ছাড়া ভক্ত সমাগম কমেছে এখানে। বাড়ছে শুধু আশ্রমের সামনের সড়ক থেকে শুরু করে গম্বুজ ও দেওয়ালের ভগ্নদশা।

“৯৫ বছর চলছে আমার, পূজা-অর্চনায় কখনও ত্রুটি রাখিনি। প্রায় ৫০ বছর ধরে সেবা করে চলেছি।কখনো চাওয়া-পাওয়ার কিছু ছিল না। শুধু একটা দুঃখ, রাস উৎসব আর রথযাত্রা ছাড়া সারা বছরই ভক্তদের একেবারে সমাগম নেই বললেই চলে। বুঝি না এর কারণ।”

এসব কথা বলছিলেন গৌর নিতাই আশ্রমের সেবায়েত সাধন চক্রবর্তী।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই এলাকার সাধারণ ভক্তদের সমন্বয়ে পরিচালনা পর্ষদ, ভক্তের দান-দক্ষিণা এবং কিছু অনুদানে পাকা স্থাপনাসহ কোনো রকমে চলছে আশ্রমের নিত্যকার্য।

বছরে দুটি উৎসব হয় এখানে; জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা এবং রাস উৎসব। সেসময় কিছু ভক্তবৃন্দের সমাগম হলেও সারা বছর আর তেমন কোনো সাড়া সাড়া থাকে না এখানে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর ছিল শুক্রবার। সেদিন বিকালে আশ্রম পরিচালনা কমিটির এক সভায় সাধারণ ভক্ত হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। অতীতে বাবাদের থেকে কিছু কিছু জানলেও, সেদিন বর্তমান প্রেক্ষাপট জানলাম বিস্তৃত।

সীমিত পূজা-পার্বণ, অপ্রতুল ভক্ত সমাগম - সব মিলিয়ে প্রায় অর্থ শূন্যতায় জরাজীর্ণ এই আশ্রমের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে এখন ।

টানা ঘণ্টাখানেক বৃষ্টি হলেই আশ্রমের গম্বুজ চুপষে জল পড়ে বিগ্রহের আসন কাঠামোর উপরে। এতে সেবায়েতের নিত্যপূজায় ব্যঘাত ঘটে। আরো কিছু জায়গায়ও বৃষ্টিতে জল পড়ে। দেওয়ালের রঙ খসে পড়ছে বিভিন্ন স্থানে।

আশ্রমের নয়টি বৈদ্যুতিক পাখার সাতটি এখন বিকল। সেবায়েতের বাসগৃহের অবস্থাও নাজুক।

অন্যদিকে আশ্রমে যাতায়তের একমাত্র সড়কটিরও নড়বড়ে অবস্থা। সড়কের তল থেকে মাটি সড়ে গেছে অনেক স্থানে। বৃষ্টিতে প্বার্শ্ববর্তী ইটের দেওয়ালও ভেঙ্গে পড়েছে। যে কোনো সময় হতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।

এতো সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সম্পৃত্ত ভক্তবৃন্দরা আশায় বুক বেঁধেছেন আগামী ৭ নভেম্বর আসন্ন রাস মহোৎসব উদযাপন উপলক্ষে। 

এরমধ্যে ২১ সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে  আহবায়ক হয়েছেন মিলন বিশ্বাস, সদস্য সচিব হয়েছে নন্দন দে এবং অর্থ সচিব হয়েছেন বিমল কান্তি ঘোষ।

আশ্রমের সবার প্রত্যাশা প্রতিবারের মত উৎসবকে কেন্দ্র করে হলেও ভক্তসমাগম নৈমিত্তিক হবে।