গোলাম আযম কারাগারে। বয়সের দোহাই দিয়ে গ্রেপ্তার এড়াতে চেয়েছিল। অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের খুজে বের করে ৯০ বছর বয়সে জেলে নেওয়ার উদাহরণ রয়েছে। মিশরের হোসনি মোবারকের বয়স ৯০, বিচার হচ্ছে। গোলাম আযমের কিছু কুর্কীর্তির বিবরণ দিয়ে আজকের দিনটি স্মরণীয় রাখতেই এই পোস্ট।
১.
১৯৯২ সালের গণআদালতে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আত্মজীবনীতে তিনি সেই অভিযোগপত্রটি উল্লেখ করেছেন। ২০০৮ সালে এটি প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছিল। ব্লগার তানভীরের ব্লগেও এটি পাওয়া যাবে।
মাননীয় আদালত,
আমি, মরহুম ডা• এ টি এম মোয়াজ্জমের পুত্র এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অভিযোগ উত্থাপন করছি। আমি অভিযোগ করছি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের পক্ষে; আমি অভিযোগ করছি পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে লাঞ্ছিত মায়েদের পক্ষে; আমি অভিযোগ করছি হানাদার বাহিনী দ্বারা ধর্ষিত বোনদের পক্ষে; আমি অভিযোগ করছি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দোসর আল বদর কর্তৃক নিহত বুদ্ধিজীবীদের পক্ষে; আমি অভিযোগ করছি শত্রুর হাতে প্রাণদানকারী পিতামাতার অসহায় এতিম সন্তানদের পক্ষে; আমি অভিযোগ করছি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিকদের পক্ষে।
আমি অভিযোগ আনছি মরহুম মওলানা গোলাম কবিরের পুত্র গোলাম আযমের বিরুদ্ধে-ইনি একজন পাকিস্তানি নাগরিক, তবে বহুদিন ধরে বেআইনিভাবে বসবাস করে আসছেন ঢাকার রমনা থানার মগবাজার এলাকার ১১৯ নম্বর কাজী অফিস লেনে।
ইনি সেই গোলাম আযম-যিনি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রতিটি অন্যায়, বেআইনি, অমানবিক ও নিষ্ঠুর কাজ প্রকাশ্যে সমর্থন করেছিলেন; যিনি মুক্তিযোদ্ধাদের দেশদ্রোহী বলে আখ্যা দিয়ে তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়েছিলেন; যিনি আল বদর বাহিনী গড়ে তুলে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করার প্ররোচনা দিয়েছিলেন। গোলাম আযমের প্ররোচনায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে আছেন আমার শিক্ষক মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সন্তোষকুমার ভট্টাচার্য ও সিরাজুদ্দীন হোসেন, আমার অগ্রজপ্রতিম শহীদুল্লা কায়সার, আমার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আহমদ, আমার সহকর্মী আবুল খায়ের, আনোয়ার পাশা, রাশীদুল হাসান ও মোহাম্মদ মোর্তজা, আমার ছাত্র আ ন ম গোলাম মোস্তফা ও সৈয়দ নজমুল হক-যাঁদের মৃত্যুতে আমি ক্ষতিগ্রস্ত, শোকাহত ও ব্যথাতুর।
….>বিস্তারিত