নবায়ন ছাড়াই ৭১ হাজার ২১৮টি যান এখনও সড়কে চলছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ।
Published : 30 Mar 2019, 04:29 PM
মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ অনুযায়ী প্রতিবছর মোটরযানের ফিটনেস সার্টিফিকেট নবায়ন করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও বিআরটিএ জানিয়েছে, ২০০৯ সালের জানুয়ারির পর এসব যানবাহনের ফিটনেস সনদ আর নবায়ন করা হয়নি।
বিআরটিএর ডেটাবেইজে ফিটনেস ছাড়া কতগুলো যানবাহন আছে, তা যাচাই করতে গিয়ে গত ১০ বছর ধরে এসব যানবাহনের ফিটনেস নবায়ন না করার বিষয়টি বেরিয়ে আসে, বলছে সংস্থাটি।
যানবাহনের ফিটনেস সনদ নবায়নের অনুরোধ জানিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিআরটিএর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “১০ বছরের বেশি সময় ধরে বেশকিছু যানবাহন তাদের ফিটনেস নবায়ন করছে না।
“এতে বোঝা যায় ওইসব যানবাহন হয় ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই চলাচল করছে অথবা ধ্বংস বা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।”
এইসব যানবাহন মালিকদের হুঁশিয়ার করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ফিটনেস ছাড়া চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে আগামী ৩১ মে তারিখের মধ্যে ফিটনেস নবায়ন করতে হবে।”
ফিটনেস সার্টিফিকেট নবায়ন অথবা ইতোমধ্যে যানবাহন ধ্বংস করা হয়ে থাকলে যানবাহনের মালিককে সে তথ্য জানানোর অনুরোধও করেছে সংস্থাটি।
তা না করলে এসব যানবাহনের নিবন্ধন বাতিল ও জরিমানার কথাও বলছে যানবাহন নিয়ন্ত্রক এ সরকারি সংস্থা।
বিআরটিএর পরিচালক (অপারেশন) সিতাংশু শেখর বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নোটিস দেওয়ার পরও ফিটনেস সনদ নবায়ন না করলে এসব যানবাহনের নিবন্ধন বাতিল করা হবে।
“তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করব। বকেয়া টাকাপয়সা আদায়ের জন্য তাদের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা করব। যদি এসব যানবাহন ঠিক থাকে তাহলে কাগজপত্র নবায়ন করা উচিত। কোনো গাড়ি অফরোড হয়ে গেলে সেটাও আমাদের জানাতে হবে। কিন্তু কেউই আমাদের জানায়নি।”
বিআরটিএর হিসাবে, রাজধানীর সড়কে ফিননেস ছাড়াই চলাচল করা যানবাহনের তালিকায় রয়েছে তিন হাজার ৭০২টি বাস, দুই হাজার ৭৯৮টি মিনিবাস এবং আট হাজার ৪৮২টি ট্রাক রয়েছে। এছাড়া ১৬ হাজার ৬১৮টি অটোরিকশা,ছয় হাজার ২১১টি অটোটেম্পো, দুই হাজার ৫৯৬টি ডেলিভারি ভ্যান, দুই হাজার ৪৩৪টি হিউম্যান হলার, তিন হাজার ৩৪টি জিপ, তিন হাজার ৩৬৪টি মাইক্রোবাস, তিন হাজার ২৪৫ পিকআপ, পাঁচ হাজার ৭৯৫টি ব্যক্তিগত গাড়ি, ১২৮টি কার্গো ভ্যান, এছাড়া ৩৪৩টি অ্যাম্বুলেন্স, ৫৮টি কাভার্ড ভ্যান, ৯৬৬টি বিশেষায়িত যান, ১৮০টি ট্যাংকার, ছয় হাজার ৬২০টি ট্রাক্টর এবং চার হাজার ৬৪৪টি অন্যান্য যানবাহন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিএর এক কর্মকর্তা বলেন, “এরমধ্যে কিছু যানবাহন ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু সেটাও মালিকরা না জানানোয় যানবাহনের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।
“১০ বছর ধরে ফিটনেস নবায়ন না করে একটা গাড়ি চলাচল করবে এটা তো হতে পারে না। অকেজো হয়ে গেলেও তো মালিক এসে আমাদের জানাবে যে গাড়িটা নষ্ট হয়ে গেছে। সেটা চলাচল করছে না। তখন আমরা সার্ভার থেকে এটা ডিলিট করে দিতে পারতাম।”
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কতগুলো যানবাহনের ফিটনেস নবায়ন হয়েছে জানতে চাইলে সিতাংশু শেখর বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।
“হয়ত আসবে দুয়েকটা। এখনও বলতে পারছি না। কাগজপত্র দেখে বলতে হবে।”
বিআরটিএর হিসাবে, বর্তমানে সারা দেশে ৩৮ লাখ ৮৫ হাজার ৪২২টি যানবাহন আছে। এরমধ্যে ২৫ লাখ ১৯ হাজার ২২৬টি মোটরসাইকেল বাদে অন্যান্য যানবাহন ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৯৬টি।