ব্রতীর জরিপনারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে ইভিএমের পক্ষে ভোট বেড়েছে

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে ভোটারদের মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলেও নির্বাচনের পর তা কেটে গেছে বলে মনে করে পর্যবেক্ষক সংস্থা 'ব্রতী'।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2011, 07:08 AM
Updated : 4 Nov 2011, 07:08 AM
ঢাকা, নভেম্বর ০৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে ভোটারদের মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলেও নির্বাচনের পর তা কেটে গেছে বলে মনে করে পর্যবেক্ষক সংস্থা 'ব্রতী'।
ভোটের সময় আট দিন ধরে পরিচালিত এক জরিপের বরাত দিয়ে সংস্থাটি বলছে, ইভিএমে ভোট দিতে ৮৮ শতাংশ ভোটারের কোনো অসুবিধা হয়নি।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে ওই জরিপের ফল এবং কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন 'ব্রতী'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন মুরশিদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি ভোটের সাত দিন আগে থেকে নির্বাচনের পরদিন পর্যন্ত ৭০০ ভোটারের ওপর এই জরিপ চালানো হয়। ইভিএম ব্যবহার হয়েছে এমন ৫৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪১টিতে পর্যবেক্ষণ চালায় ব্রতী।
'ইভিএম সম্পর্কিত ভোটার দৃষ্টিভঙ্গি' শীর্ষক এ জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৯৭ শতাংশ ভোটারই ইভিএমে ভোট নেওয়ার বিষয়টি জানতেন। তবে কীভাবে ভোট দিতে হবে তা জানতেন শতকরা ৪৬ জন।
ভোটের আগে ইভিএমকে নিরাপদ মনে করতেন ৫১ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। ১২ ভাগের মত ছিলো- এটি নিরাপদ নয়। বাকিরা বলেছিলেন, তারা 'জানেন না'।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৮ শতাংশ তখন বলেছিলেন, তারা পরবর্তী সব নির্বাচনেই ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে। আর ২৯ শতাংশ ইভিএমের বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন। 'এখনই বলা যাচ্ছে না'- বলেছিলেন ১৩ শতাংশ উত্তরদাতা।
ব্রতীর প্রধান নির্বাহী বলেন, ভোটের পর ইভিএম সম্পর্কে মানুষের ধারণা আরো ইতিবাচক হয়ে উঠেছে।
নির্বাচন পরবর্তী জরিপে দেখা যায়, আগে থেকে জেনে এসে ইভিএমে ভোট দিয়েছেন শতকরা ৭৯ ভাগ ভোটার। ভোট দিতে অসুবিধা হয়েছে শতকরা ১২ ভাগের। বাকি ৮৮ শতাংশ উত্তরদাতাই বলেছেন, তাদের কোনো অসুবিধা হয়নি।
ইভিএমে ভোট দেওয়ার পর এ পদ্ধতিকে নিরাপদ বলে মনে করছেন ৮২ শতাংশ উত্তরদাতা। আর ৭ শতাংশ এখনো মনে করেন, ইভিএম নিরাপদ নয়। ১১ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা জানেন না।
শারমীন মুরশিদ বলেন, "এই নির্বাচনের আগে ও পরে কোনো সহিংসতা ছিলো না। কোন ত্রাস বা ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও আমরা পাইনি। সংখ্যালঘু ভোটাররা ভোট দিয়েছেন নির্ভয়ে। প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও আসেনি। জালভোটের কোনো অভিযোগও আমরা পাইনি।"
নারায়ণগঞ্জে ৯টি ওয়ার্ডের ৫৮টি কেন্দ্রের চারশ ৫০টি বুথে একটি করে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। এসব ওয়ার্ডে ভোটার ছিলেন এক লাখ ৪৮ হাজার ৬২৯ জন।
এর আগে গত বছরের জুনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একটি ওয়ার্ডে (চট্টগ্রাম মহানগরীর জামালখান রোড এলাকার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে) পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হলেও বড় পরিসরে এ প্রযুক্তির ব্যবহার নারায়ণগঞ্জেই প্রথম।
ব্রতীর সুপারিশ
এই পর্যক্ষেক সংস্থা মনে করে, শুধু নির্বাচন উপলক্ষে নয়, বরং এখন থেকেই সারা দেশে ইভিএম সম্পর্কে প্রচারাভিযান ও প্রশিক্ষণ চালানো প্রয়োজন। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতে হলে- সেখানেও এখন থেকেই প্রচার শুরু করতে হবে। ইভিএম চালনার বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষক তৈরি করতে হবে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনে একটি শক্তিশালী সেল গঠন করতে হবে।
টিভি চ্যানেলগুলোতে ইভিএমের ব্যবহারবিধি বারবার দেখানোর বিষয়েও সুপারিশ করেছে ব্রতী। এতে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষও এ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পারবে।
ভোট দেওয়ার পর ভোটারকে ইভিএমে তার ভোটের মার্কাটি দেখানোর ব্যবস্থা করা গেলে ভোটারদের আস্থা আরো বাড়বে বলেও মনে করে ব্রতী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএন/জেকে/১৮৫৭ ঘ.