মিয়ানমারে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন থেকে লাখো মানুষকে বাঁচানোর জন্য আশ্রয়শিবিরগুলো খালি করতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।এ শিবিরগুলোতে বসবাসকারী বেশিরভাগই রোহিঙ্গা মুসলিম।বুধবার তাদেরকে সরিয়ে নেয়ার জোর চেষ্টা চালায় কর্তৃপক্ষ।
Published : 15 May 2013, 04:53 PM
জাতিগত দাঙ্গার কারণে বাসস্থানহারা রোহিঙ্গাদের ঠাঁই হয় এ সমস্ত আশ্রয়শিবিরে।তাদের অনেকেই শিবির ছাড়তে না চাওয়ায় বিপাকে পড়েছে কর্তৃপক্ষ।
মহাসেনের প্রভাবে ইতোমধ্যেই শ্রীলঙ্কায় অন্তত ৭ জন নিহত এবং ৩ হাজার ৮৮১ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে সরকারিভাবে জানান হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপের ফলে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এ ঘূর্ণিঝড় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল এবং প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চল অতিক্রম করবে বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ।
আর তাই ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হওয়ার আগে মঙ্গলবারের মধ্যেই মিয়ানমার সরকার অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ৩৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর পরিকল্পনা করে।
কিন্তু রাখাইন রাজ্যের আশ্রয় শিবিরগুলোর রোহিঙ্গারা সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তাদের অস্থায়ী নিবাস ছাড়তে না চাওয়ায় এবং সরকারের প্রকৃত মনোভাব নিয়ে সন্দেহ পোষণ করায় তাদেরকে সরিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
সিতয়ু শহরের উপকন্ঠে মানজি জংশন সংলগ্ন সমুদ্র তীরবর্তী একটি আশ্রয় কেন্দ্রের কয়েকজন রোহিঙ্গা রয়টার্সকে বলেছে, আশ্রয় শিবির ছাড়ার চেয়ে বরং তাদের ঝড়ে মরে যাওয়া ভাল।
আরেক রোহিঙ্গা মুসলিমের উক্তি, “গত বছর রাখাইন-রোহিঙ্গা দাঙ্গার কারণে আমি এখানে এসেছি। দাঙ্গায় আমি আমার মা ও দুই মেয়েসহ সবকিছু খুইয়েছি। ঘূর্ণিঝড় এখানে আঘাত হানলে আমি আল্লাহর কাছে বলব, আমরা সবাই যেন এখানে মরে যাই। কারণ গত বছর আমরা আমাদের সবকিছু হারিয়েছি।”
মিয়ানমারে গত বছর জুন এবং অক্টোবর মাসে রাখাইন বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে জাতিগত দাঙ্গায় কমপক্ষে ১৯২ জন মানুষ নিহত হয়।
সাম্প্রদায়িক এ সহিংসতা এবং অস্থিরতার শিকার প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা অাশ্রয়শিবিরগুলোতে বাস করছে। এরা সবাই মহাসেনের ঝুঁকির মুখে আছে।জাতিসংঘ গত সপ্তাহেই সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া না হলে মানবিক বিপর্যয় ঘটবে।