সিডর-ক্ষতি: দাতাদের কাছে ১শ ৮০ কোটি ডলার চেয়েছে সরকার

ঘূর্ণিঝড়- পরবর্তী স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন কাজের জন্য প্রাথমিকভাবে দাতাদের কাছে ১শ ৮০ কোটি ডলার (১২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) সাহায্য চেয়েছে সরকার। বুধবার বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও দেশের সমন্বয়ে গঠিত লোকাল কনসালটেটিভ গ্র"পের (এলসিজি) সঙ্গে বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যয়ের এই হিসাব জানানো হয়। ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ের পর এটাই ছিল এলসিজির সঙ্গে সরকারের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2007, 10:00 AM
Updated : 12 Dec 2007, 10:00 AM
ঢাকা, ডিসেম্বর ১২ (বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম) -- ঘূর্ণিঝড়- পরবর্তী স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন কাজের জন্য প্রাথমিকভাবে দাতাদের কাছে ১শ ৮০ কোটি ডলার (১২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) সাহায্য চেয়েছে সরকার।
বুধবার বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও দেশের সমন্বয়ে গঠিত লোকাল কনসালটেটিভ গ্র"পের (এলসিজি) সঙ্গে বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যয়ের এই হিসাব জানানো হয়। ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ের পর এটাই ছিল এলসিজির সঙ্গে সরকারের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।
বৈঠক শেষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, "ঝড়ের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসনের জন্য প্রাথমিকভাবে ১২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা দরকার।"
তিনি জানান, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করতে ৪৫ কোটি ডলার এবং উপকূলীয় এলাকায় দুই হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে ১০০ কোটি ডলার দরকার। এছাড়া জরুরি বাজেট সহায়তা বাবদ দাতাদের কাছে ৪০ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে।
দাতাদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ইআরডি সচিব বলেন, "তারা আমাদের আলাদাভাবে সাহায্য করতে চায়। কেউ হয়তো আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা করতে আগ্রহী, কেউ আবার বনায়ন বা অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাহায্য করতে চায়।"
এলসিজির সমন্বয়ক ও বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি শিয়ান ঝু বলেন, " বাংলাদেশ সরকার আমাদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যয়ের হিসাব জানিয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের আরো সুনির্দিষ্ট আলোচনা করার প্রয়োজন।"
তিনি বলেন, "বাংলাদেশ পরিবেশগত দিক থেকে অত্যন্ত ঝুঁকির মুখে থাকা একটি দেশ। তাই দীর্ঘমেয়াদি সাহায্যের দরকার।"
শিয়ান ঝু জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফুল সি প্যাটেল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে আসছেন। তিন দিনের এই সফরে তিনি বাংলাদেশকে সহায়তা করার ব্যাপারে ব্যাংকের পরিকল্পনা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
ঘূর্ণিঝড় পুনর্বাসন ও দুর্গতদের সাহায্যে দাতারা এখন পর্যন্ত ২২ কোটি ডলার সাহায্যের প্রতিশ্র"তি দিয়েছে। এর বাইরে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আরো ৪০ কোটি ডলার দেবে বলে জানিয়েছে। এছাড়া সৌদি আরব, ভারত ও পাকিস্তান বাংলাদেশকে খাদ্য ও ত্রাণ সহায়তার প্রতিশ্র"তি দিয়েছে এবং এগুলো শিগগিরই বাংলাদেশে এসে পৌঁছবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে ৩০টি জেলায় ৩ হাজার ৩৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ২০ লাখ ৬৪ হাজার পরিবারের ৮৯ লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ৭ লাখ ৪২ হাজার ৮২৬ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ ও ১৭ লাখ ৩০ হাজার ১১৬ একর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির সংখ্যা ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭৭টি এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৯ লাখ ৫৫ হাাজর ৬৫টির। ৪০ লাখ ৬৫ হাজারেরও বেশি গাছপালা ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া এক হাজার ৮৭৫ কিলোমিটার বাঁধ এবং ১ হাজার ৬৭৮ কিলোমিটার ব্রিজ ও কালভার্ট নষ্ট হয়েছে।
বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম/এসআর/টিএইচ/জেকে/এসকে/২১৫২ঘ.