পুরনো গাড়ির আমদানি কমানো হবে: অর্থমন্ত্রী

পুরনো (রিকন্ডিশন্ড) গাড়ি আমদানি কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2012, 08:41 AM
Updated : 21 June 2012, 08:41 AM
ঢাকা, জুন ২১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- পুরনো (রিকন্ডিশন্ড) গাড়ি আমদানি কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তিনি বলেছেন, “আমাদের (সরকার) উদ্দেশ্য হল, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি কমানো। সেকেন্ড হ্যান্ড কার ইমপোর্ট সুড বি রিডিউজড।”
২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বৃহস্পতিবার এক মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ী নেতারা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির শুল্কহার কমানোর দাবি জানালে মন্ত্রী উল্টো একথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, “২০০৮ সালে আমি একটি পুরনো গাড়ি কিনেছিলাম, ভালোই চলেছিল। কিন্তু আমার বোন দুটো কিনেছিল, একটি কয়েক দিনের মাথায় নষ্ট হয়ে যায়।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বিটিএমএ, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় এফবিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে রপ্তানির ক্ষেত্রে বর্ধিত উৎসে কর হার প্রত্যাহার, ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা করাসহ প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কিছু সংশোধনী আনার সুপারিশ করা হয়।
রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ওপর শুল্কহার কমানোর বিষয়ে সুপারিশে বলা হয়, বাজেটে ঘোষিত বিধান জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত শুল্কায়ন নীতির সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। রিকন্ডিশন্ড গাড়ির নতুন মূল্যের ভিত্তিতে শুল্ক আরোপ করার কারণে অনেক সময় এর মূল্য নতুন গাড়ির চেয়ে বেড়ে যায়।
জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানি কমিয়ে আনা ও এর আমদানি নিরুৎসাহিত করা। এ অবস্থায় শুল্কায়ন পদ্ধতিতে অসঙ্গতি থাকলেও তা এবার বহাল থাকবে। তবে এটা যৌক্তিক করা যায় কি না, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।”
বৈঠকে এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে আমদানি শুল্ক সংক্রান্ত ১৬ দফা, মূল্য সংযোজন কর সংক্রান্ত ১৪ দফা ও আয়কর সংক্রান্ত ৭ দফা সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
এর মধ্যে সকল প্রকার মূলধনী যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও কাঁচামালের ওপর ১ শতাংশ হারে শুল্ক নির্ধারণ, ন্যূনতম আয়কর ২ হাজার টাকা বহাল রাখা, ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার ট্যাক্স মওকুফ রাখা, বিদ্যমান প্যাকেজ পদ্ধতিতে ভ্যাট প্রদান ও সব রপ্তানির ক্ষেত্রে উৎসে কর হার না বাড়িয়ে বিদ্যমান হার বহাল রাখার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ সব রপ্তানির ক্ষেত্রে উৎসে কর হার না বাড়ানোর সুপারিশ করে বলেন, “মন্দার কারণে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি এবার ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। গত বছর এটা ছিল ৪২ শতাংশ। আগামীতে এটা আরো কমবে।”
“এ অবস্থায় বাজেটে সব রপ্তানির ক্ষেত্রে উৎসে করহার ১ দশমিক ২ শতাংশ করা হলে রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে,” বলেন তিনি।
বিদায়ী বাজেটে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে দশমিক ৬০ শতাংশ এবং অন্যান্য পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে দশমিক ৭০ শতাংশ উৎসে কর বহাল থাকলেও নতুন বাজেটে সবক্ষেত্রে তা বাড়িয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান ও বিটিএমএ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামীনও রপ্তানি ক্ষেত্রে উৎসে কর কমানোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী সরাসরি কিছু বলেননি। তিনি শুধু বলেন, “দেখা যাক, ২৭ তারিখে জানা যাবে।”
জাতীয় সংসদে আগামী ২৭ জুন অর্থবিল এবং ২৮ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস হবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি আজাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উৎসে কর কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী। আশা করছি, প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবেন।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এআরএইচ/এমআই/২০৩৭ ঘ.