কালো টাকা সাদাপ্রধানমন্ত্রীর কাছে সুযোগ চাইলেন ব্যবসায়ীরা

পুঁজিবাজারে 'কালো' টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রাখা এবং ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কমিশনের ওপর উৎসে কর না বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2011, 11:34 AM
Updated : 26 June 2011, 11:34 AM
ঢাকা, জুন ২৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- আগামী অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে 'কালো' টাকা 'সাদা' করার সুযোগ রাখা এবং ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কমিশনের ওপর উৎসে কর না বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা এসব দাবি নিয়ে রোববার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রী এসব দাবি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে বৈঠক শেষে তারা জানান।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, "অপ্রদর্শিত আয় পুঁজিবাজারে খাটানোর সুযোগ রাখার জন্য আমরা আনুরোধ করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উনি বিষয়টি দেখবেন।"
প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার স্বার্থে সূচক ৬ হাজার থেকে সাড়ে ৬ হাজারের মধ্যে রাখা এবং নতুন কোম্পানির শেয়ার বাজারে ছাড়ার ওপরও গুরুত্ব দেন বলে আজাদ জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, "কালো টাকার একটি উৎস হলো অপ্রদর্শিত আয়, যা বৈধ উপায়ে অর্জিত। আরেকটি উৎস আছে যেটি অবৈধ। ওই উৎস থেকে কালো টাকা বাজারে আসুক তা আমরা কেউ চাই না।"
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি ট্রেজারি বন্ডে ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখেছেন অর্থমন্ত্রী। পুঁজিবাজারেও এ সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার প্রথম বাজেটে (২০০৯-১০) পুঁজিবাজারসহ চারটি খাতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ওই অর্থবছরে প্রায় ৪২৩ কোটি 'কালো' টাকা পুঁজিবাজারে খাটানো হয়। তবে চলতি অর্থবছরে এ সুযোগ ছিল না।
রোববার রাতে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সভাপতি শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনেকগুলো প্রস্তাব দিয়েছি। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের বিষয়টিও রয়েছে।"
"এছাড়া ব্রোকারেজ হাউজগুলোর পাওয়া কমিশনের ওপর উৎসে আয়কর কাটার হার- যেটা প্রস্তাবিত বাজেটে শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে- তা আগের অবস্থাতেই রাখার অনুরোধ করেছি আমরা," যোগ করেন তিনি।
এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর রেয়াতের সুবিধা বহাল রাখার জন্যও প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে ডিএসই সভাপতি জানান।
তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা শুনেছেন। তিনি বলেছেন, 'আমি আপনাদের কিছু দেব। যদি কিছু না-ই দেই, তাহলে আপনাদের সঙ্গে বসবো কেন?'"
অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আহম মুস্তফা কামাল গত ২৩ জুন সাংবাদিকদের জানান, অপ্রদর্শিত আয়ের অর্থ বন্ডের পাশাপাশি পুঁজিবাজারেও বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি। এছাড়া ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কমিশনের ওপর উৎসে আয়কর না বাড়ানো এবং ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট করের হার কমানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বিজিএমইএ সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আল আমিন, বিকেএমইএ সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান ও রিহ্যাবের মহাসচিব মুরাদ ইকবাল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএসজেড/জেকে/২৩২২ ঘ.