ঢাকা, জুন ২৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বর্তমানে দেশে ২৩টি গ্যাসক্ষেত্রে উত্তোলনযোগ্য প্রায় ১০ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ থাকলেও দৈনিক সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে এ তথ্য জানান।
সকাল সোয়া ১১টায় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। দিনের কার্যসূচির শুরুতে স্পিকার আবদুল হামিদ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ও উত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
নেত্রকোনা-১ আসনে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ প্রায় ১০ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ২৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি। এ চাহিদার বিপরীতে সর্বোচ্চ ২০২০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হয়েছে।
নতুন কূপ খনন ও বিদ্যমান কূপের ওয়ার্কওভার সম্পন্ন করে ২০১৫ সাল নাগাদ গ্যাসের উৎপাদন দৈনিক ২৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।
লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক জানান, দেশে এ যাবত ২৩টি গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।
এছাড়া বাপেক্সের মাধ্যমে টু-ডি এবং থ্রি-ডি সাইসমিক জরিপসহ গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য কনকোফিলিপসের সঙ্গে উৎপাদন-বণ্টন চুক্তির কথাও তুলে ধরেন তিনি।
দেশের উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পাঁচটি কয়লা ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য অপু উকিলের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সারাদেশে ২৯টি জেলা পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছে।
কুমিল্লা-৮ আসনের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক জানান, গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে সরকার স্বল্প মেয়াদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় দৈনিক উৎপাদন ২৮৪ মিলিয়ন ঘনফুট বেড়েছে।
জ্বালানি তেলের ১০ প্রকল্প
সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য এমএ জব্বারের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, জ্বালানি তেলের মজুদ বাড়াতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) তার আওতাধীন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে ১০টি প্রকল্প নিয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জ্বালানি তেলের মজুদ প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন বাড়বে।
এছাড়া বিপিসি নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৯১ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা বাড়ানোর কার্যক্রম চলছে।
বিদ্যুতের বিল বকেয়া ১২৬ কোটি টাকা
চট্টগ্রাম-১৫ আসনে বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক জানান, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কাছে বিদ্যুৎ বিল বাবদ চলতি মাসের বিলসহ ১২৬ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে; যা প্রায় সাড়ে ৫ মাসের বিলের সমান।
বকেয়ার মধ্যে ৫১ কোটি টাকা সরকারি ও ৭৫ কোটি টাকা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের। এরমধ্যে পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন রয়েছে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সালমা ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২০-২১ সালের মধ্যে প্রতিটি বিদ্যুৎবিহীন গ্রামসহ সারাদেশে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিতে প্রায় ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর প্রশ্নের জবাবে এনামুল জানান, গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে পিডিবি ৫১৬টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।
বিদ্যুতের জন্য ৩৯ চুক্তি
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজানের প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক জানান, এ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিদেশি ও দেশি কোম্পানির সঙ্গে ৩৯টি চুক্তির আওতায় মোট ৪৫০৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৪১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে চুক্তি সই হয়েছে।
বিদ্যুৎ প্রকল্পের মধ্যে ১২০১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদন হচ্ছে। বাকি ৩৩০৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৬টি বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে।
চট্টগ্রাম-১০ আসনে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এমএ লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে ৭০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন এলাকায় এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণীর ৮৩ দশমিক ৪১ লাখ গ্রহক বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএইচসি/এমআই/১৩২৫ ঘ.