এ কর্মসূচি ঘিরে দূতাবাস এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
Published : 08 Dec 2024, 01:46 PM
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশন অভিমুখে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের পদযাত্রা রামপুরা ব্রিজে আটকে দিয়েছে পুলিশ।
পরে পুলিশের প্রস্তাব অনুযায়ী তিন সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে ছয়জন স্মারকলিপি দিতে দূতাবাসে যাচ্ছেন।
পুলিশের গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার রাকিব হাসান বলেন, “নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে পদযাত্রাটি রামপুরা ব্রিজে আটকে দেওয়া হয়েছে।
“এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের প্রতিনিধি দলকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী আমরা ছয়জন প্রতিনিধিকে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছি।"
ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
এর আগে এ কর্মসূচি ঘিরে ভারতীয় হাই কমিশন এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের কথা জানিয়েছেন ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটির এক কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “ভিয়েনা কনভেনশনের চুক্তি অনুযায়ী, দূতাবাসের নিরাপত্তার স্বার্থে সকল ধরনের প্রস্তুতি আমাদের সার্বক্ষণিক থাকে।
“আজকের বিএনপির অঙ্গসংগঠনের ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে কর্মসূচি ঘিরে বাড়তি প্রায় ১০০ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।"
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নয়া পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া এই পদযাত্রা সাড়ে ১২ টার দিকে রামপুরা ব্রিজের উপর ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয় পুলিশ।
নয়া পল্টনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর উদ্বোধন করা এই কর্মসূচিতে তিন সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন।
সেখানে মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানি, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
সমাবেশে যুবদলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না বলেন, “আমাদের এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ভারতের উগ্রবাদী শাসকগোষ্ঠী যে আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে নিয়ে- আমরা তার প্রতিবাদ জানাতেই এই কর্মসূচি নিয়েছি।
“আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, এসব করে কোনো লাভ হবে না। এদেশের মানুষ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেছে। এতে রক্ষার জন্য আমরাও সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত।”
পদযাত্রায় তিন সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন স্তরের কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশ নেন।
এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে সকাল থেকে নয়া পল্টনের মিচিল নিয়ে জড়ো হন নেতাকর্মীরা। কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল রেস্তোরাঁ মোড় থেকে ফকিরেরপুল মোড় পর্যন্ত জনস্রোত তৈরি হয়।
নেতাকর্মীরা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা, ঢাকা’, ‘রুশ-ভারতের দালালেরা- হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘স্বাধীনতা এনেছি, স্বাধীনতা আনব’, ‘রক্তে কেনা স্বাধীনতা, ভারতের আধিপত্য মানি না, মানব না’, ‘প্রতিবেশী বন্ধু চাই, প্রতিবেশী প্রভু নয়’, ‘ভুটান নয়, সিকিম নয়, এদেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ’-এসব স্লোগান দেন।
গত সোমবার ডানপন্থি একটি হিন্দু সংগঠনের আহ্বানে কিছু বিক্ষোভকারী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালায়। তারা সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলে। পরে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।
বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানোর নিন্দা জানিয়ে ওই বিক্ষোভ হওয়ার কথা বলা হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।