সেনা সদস্যদের টহলের প্রয়োজন নেই: ইসি

সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে রাখলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘পর্যাপ্ত’ সংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকায় সেনা সদস্যদের টহলে না রাখার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2015, 04:07 PM
Updated : 23 April 2015, 04:07 PM

২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ‘স্টাইকিং ফোর্স’ হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত জানানোর পরদিন তা বদলে সেনাবাহিনীকে ‘রিজার্ভ ফোর্স’ হিসেবে রাখার ব্যাখ্যায় এই যুক্তি দেখানো হয়।

এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনার এম শাহনেওয়াজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের কাছে ইসির ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেন, “যেহেতু অন্যান্য বাহিনী প্রয়োজনের তুলনায় এ নির্বাচনে অনেক বেশি রেখেছি, তাই আলাদাভাবে সেনাবাহিনীকে টহল দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। যখনই দরকার হবে প্রয়োজন হলে রিটার্নিং অফিসার ডাকলে টহল দেবে।”

পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, “তাদের তো এক জায়গায় থাকতে হবে। আমরা মনে করেছি, ক্যান্টনমেন্টই তাদের জন্য বেস্ট পজিশন।”

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি ছিল বিএনপির। অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই দাবি মেনে নেয় ইসি।

এরপর গত মঙ্গলবার ‘স্ট্রাইকিং ও রিজার্ভ ফোর্স’ হিসেবে কাজ করতে তিন ব্যাটালিয়ন সেনা সদস্য চেয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে চিঠি পাঠায় ইসি। কিন্তু পরদিন আরেকটি চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়, সেনা সদস্যরা সেনানিবাসে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে সেনানিবাসে থাকবে।

সেনা টহলের এই ছবি দশম সংসদ নির্বাচনের

এভাবে সেনাবাহিনী মোতায়েনকে স্বাগত জানায়নি বিএনপি। তারা সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে রাখার দাবি জানিয়েছিল, যা সিইসি আগেই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।     

সেনা মোতায়েন নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে বৃহস্পতিবার বিকালে ইসির ব্যাখ্যা নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ।

তিনি বলেন, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার সদস্য টহল ও বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করবে।

“সেনাবাহিনীকে তাই রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে রাখা হয়েছে। যখনই প্রয়োজন হবে রিটার্নিং অফিসার বলার সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেখানে যাবে।”

তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবেই কাজ করবে, তবে রিটার্নিং অফিসার চাইলে তারা কাজ করবে। সেনাবাহিনীর ভূমিকা সঠিকভাবে থাকবে।”

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে পাঠানো চিঠির ভাষা পরিবর্তনের ব্যাখ্যায় শাহনেওয়াজ বলেন, “সেনাবাহিনী কোথায় থাকবে ওই (মঙ্গলবার পাঠানো চিঠি) চিঠিতে উল্লেখ ছিল না।

“যেহেতু নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট রয়েছে। যেজন্য সেনাবাহিনীকে ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করার জন্য বলেছি। তারা প্রস্তত থাকবে।”

“প্রথম চিঠির সঙ্গে দ্বিতীয় চিঠির কোনো পরিবর্তন নেই।  মূলত সেনাবাহিনীর অবস্থান বোঝাবার জন্যই চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ফাইল ছবি

এরপর সন্ধ্যায় সিইসি তার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের দেখে নিজেই বলেন, “সেনা মোতায়েনের ব্যাপার তো, আমরা বুঝে গেছি। কিছুক্ষণ আগে তো মো. শাহনেওয়াজ সাহেব আপনাদের অনেক প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। কাজেই কোনো প্রশ্ন নয়; তারপরও বলছি। এটা তো কোনো বিষয়ই দেখছি না।”

সেনা সদস্যদের সেনানিবাসে অবস্থানের ব্যাখ্যায় কাজী রকিব বলেন, “সেনাবাহিনী সব সময় রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে থাকে; এবারও তাই থাকবে।

“এর অবস্থান এমনই-ক্যান্টনমেন্ট সেন্ট্রালি লোকেটেড। (নির্বাচনী এলাকার) যে কোথাও যেতে আসতে এটা বেটার। তাদের তো এক জায়গায় থাকতে হবে। আমরা মনে করেছি- ক্যান্টনমেন্ট তাদের জন্য বেস্ট পজিশন।”

সেনানিবাসে থাকলেও রিটার্নিং কর্মকর্তা ডাকামাত্রই তারা বেরিয়ে আসবেন বলে জানান তিনি।

সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়েই গাড়িতে চড়ে বসেন সিইসি।