কুমার নদে দূষণ, মরছে মাছ

ঝিনাইদহ জেলার প্রবাহ বন্ধ হওয়া কুমার নদের পানি দূষিত হয়ে ব্যাপকহারে মাছ ও জলজ প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে।

বিমল সাহা ঝিনাইদহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2015, 01:58 PM
Updated : 16 April 2015, 02:34 PM

তবে, কী কারণে এবং কোথা থেকে এ দূষণের সৃষ্টি হয়েছে তা কেউ নিশ্চত করতে পারেনি।

শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জের আব্দুল কাদেরসহ স্থানীয় কয়েকজন জানান, ৩/৪ দিন আগে থেকে উজানে হরিণাকুন্ডুর চরপাড়া থেকে শুরু করে ভাটিতে শৈলকুপার আলফাপুর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকার পানিতে দূষণ দেখা দেয়। পানির রং কালো হয়ে গেছে।

কোনো কোনো জায়গায় পানি দুর্গন্ধ হয়ে পড়েছে। এখানে গোসল করলে গায়ে চুলকানি হচ্ছে।

টেংরা, পুঁটি, বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি, ফলিসহ নানা ছোট মাছ আধমরা হয়ে ভেসে উঠে নদের কূলে চলে আসছে। অনেক মাছ মারাও যাচ্ছে।

নদের তীরবর্তী গ্রামের শত শত নারী, পুরষ ও শিশু জাল ও হাত দিয়ে মাছ ধরছে।

স্থানীয়রা জানান, কুমার নদ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার উপর দিয়ে প্রবাহিত মাথাভাঙ্গা নদী থেকে বের হয়ে ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার উপর দিয়ে মধুমতি নদীতে পড়ত। এক সময় এ উৎস বন্ধ হয়ে যায়।   

এছাড়া গড়াই নদী থেকে কুষ্টিয়ার উপর দিয়ে কালী ও ডাকুয়া নদী হয়েও প্রবাহ আসত কুমারে।

১৯৬০ সালের দিকে গঙ্গা-কপোতক্ষ (জিকে) প্রকল্প বাস্তবায়নকালে কালী ও ডাকুয়া নদের ওই উৎসমুখে বাঁধ দেওয়া হয়। এতে কালী, ডাকুয়া ও কুমারের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর এটি দীর্ঘ একটি হ্রদের মতো হয়, যাতে বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন প্রজাতির ছোট দেশি মাছের আবাস গড়ে উঠে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নদের পানি দূষিত হয়ে কালো হয়ে গেছে। পানিতে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়েছে। এ কারণে মাছ ভেসে উঠছে এবং মারা যাচ্ছে।

তিনি জানান, উজান খেকে কোনো শিল্পের বিষাক্ত বর্জ্য এ পানিতে মিশায় এ দূষণ হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শৈলকুপা উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাবদার হোসেন মোল্লা জানান, ১০ বছর আগে কুষ্টিয়া চিনি কলের বর্জ্য চাঁপাইগাছি বিলে ফেলার পর ওই বর্জ্য বিলের পানিতে মেশে এবং পরে কুমার নদে এসে পড়ে।

সেবারও কুমারের পানি দূষিত হয়ে প্রচুর মাছ মারা যায় বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোন উৎস থেকে বিষাক্ত বর্জ্য এখানে মিশছে তা সনাক্তের চেষ্টা চলছে।

পানি দূষণের ফলে মৎস্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।