নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার সাকির

নিজের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থী গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2015, 01:56 PM
Updated : 11 April 2015, 01:56 PM

২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের এই প্রার্থী শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৮টি অঙ্গীকার করে ইশতেহার প্রকাশ করে বলেন, ““নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠাই আমার প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার।”

ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে টেলিস্কোপ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন বামপন্থি এই নেতা। তার নির্বাচনী স্লোগান- ‘আগামীর ঢাকা সকলে মিলে’।

নির্বাচনী ইশতেহারে সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে সমন্বিত করে স্বশাসিত নগর সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন সাকি।

তিনি বলেন, “এই শহরে বিশুদ্ধ পানির কোনো নিশ্চয়তা নেই। শহরের বাতাস বিষাক্ত। অপরিকল্পিত উপায়ে আবাসিক এলাকাকে বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত করা হচ্ছে। গণপরিবহনের অপর্যাপ্ততার অভাবে প্রতিদিন মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থেকে কিংবা যানজটে।

“নারীরা এই নগরে মর্যাদা আর নিরাপত্তা নিয়ে চলাফেরা করতে পারেন না। প্রতিনিয়ত ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে আমাদের। নদী-নালা-খাল-বিল আজ মৃতপ্রায়। এই নগরীকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন নতুন এক জাগরণী ডাকের।”

এই সমস্যা সমাধানে স্বশাসিত নগর সরকার প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে গণসংহতির এই নেতা বলেন, “দুর্নীতিমুক্ত এবং জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক নগর প্রশাসন পরিচালনাই হবে আমাদের মূলনীতি।”

তার নির্বাচনী অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে- নগরীকে ওয়াইফাই প্রযুক্তির আওতায় এনে সবার জন্য ন্যূনতম ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগামী তরুণদের জন্য বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের জন্য সব বাসে অর্ধেক ভাড়াগ্রহণ বাধ্যমূলক করা, নগর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে প্রযুক্তি শিক্ষা, পেশাগত প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন বিদেশি ভাষার শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

প্রতিটি ওয়ার্ডে নারীদের জন্য পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা করা, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও উত্ত্যক্তকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে কম্যুনিটি পুলিশের ব্যবস্থা করা, খালি হাতে আত্মরক্ষার কৌশল নারীদের শেখানোর উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।

শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খেলার মাঠ ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা, পরিবহণ ও হাসপাতালে প্রবীণ নাগরিকদের অগ্রাধিকারের ব্যবস্থা করার অঙ্গীকারও করেছেন তিনি।

নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে বর্জ্য তাৎক্ষণিকভাবে সরানোর ব্যবস্থা করা, ডাস্টবিন ব্যবহারে নাগরিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি নির্মাণ কাজজনিত ধুলা কমাতে আলাদা কর আরোপ করার প্রস্তাব রেখেছেন সাকি।

প্রতিটি ওয়ার্ডে বহুতল পার্কিং এর ব্যবস্থা করা, ব্যক্তিগত গাড়িকে নিরুৎসাহিত করে গণপরিবহনকে উৎসাহিত করার পরিকল্পনাও রয়েছে তার।

মেয়র হলে বস্তিতে ওয়াসার পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুলভে নিরাপদ পানি সরবরাহ, নির্দিষ্ট দূরত্বে এবং জনবহুল সড়কগুলোতে নিরাপদ পানি প্রাপ্তির ব্যবস্থাও করবেন সাকি।  

প্রতিটি ওয়ার্ডে নাগরিক কমিটি গঠন ও গণশুনানির ব্যবস্থা করে সম্পদের ব্যবহার উন্নয়ন পরিকল্পনা নির্ধারণ ও তদারকি এবং সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটি হটলাইন চালু ও কল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকারও করেছেন তিনি।