মর্যাদাক্রমের রায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন

রাষ্ট্রীয় পদ মর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায়কে ‘নীতির বাইরে’ বলে মন্তব্য করেছেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2015, 01:05 PM
Updated : 28 Jan 2015, 04:51 PM

“নিজেরাই নিজেদের প্রমোশন দেওয়া সমীচীন নয়, সম্পূর্ণ এথিকসের বাইরে,” বুধবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন তিনি।

মর্যাদাক্রম নিয়ে এক রিট আবেদন সম্প্রতি আপিল বিভাগ নিষ্পত্তি করেছে। এর ফলে জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং প্রধান বিচারপতি পদ মর্যাদা একই এবং জেলা জজদের মর্যাদা সচিবদের ওপর হবে বলে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান।

পরে বিচারকরা পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগে এই বিষয়ে কথা না বলতে আইনজীবীদের বারণ করে দেন।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, “প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে একটা নিয়ম-নীতি আছে। আমাদের সংবিধানে বলা আছে, সবাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আইন সভা, বিচার বিভাগ ও প্রশাসন- এই তিনটি হচ্ছে স্তম্ভ। এর  সমন্বয়ে সব কিছু চলবে।

কিন্তু কেউ যদি নিয়ম না ‌মেনে হঠাৎ করে তাদের ইচ্ছামতো একটি ঘোষণা দিয়ে দেয়, তাহলে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আমার অবাক লাগে, সেটা সংবিধানে সুনির্দিষ্টভাবে রয়েছে- কার, কোথায়, কী অবস্থান হবে। এখানে যার যার নিজের মর্যাদা নিজে দেওয়া, নিজের পক্ষে নিজের রায় দেওয়া, এটা তো সমীচীন নয়। এটা তো পার্টিজান রোল হয়ে যায়।”

“এভাবে নিজের পক্ষে নিজেকে ঘোষণা কখনও কোনোদিন আদালতের রায়ে দেওয়া যায় না। এরকম হলে যে যেখানে আছে, যার যার মতো করে সুযোগ নেবে, কোনো শৃঙ্খলাই থাকবে না,” বলেন সরকার প্রধান।  

তিনি আরও বলেন, “এই সিদ্ধান্তের ফলে চরম একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির উপক্রম হয়েছে। এর আগে বেতনভাতার ব্যাপারেও তারা আলাদা একটি কমিশন করে বেতন-ভাড়া বাড়িয়ে নেয়। সেখনেও নানা রকমের সমস্যা হয়। যাই হোক, পরে আমরা বসে মিটমাট করে একটা জায়গায় গেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জেলা জজের মর্যাদা যদি সচিব মর্যাদার হয়, তাহলে উচ্চ আদালতে যারা আছেন, তারা কোন মর্যাদায় যাবেন? যেতে যেতে তো মনে হয় তারা রাষ্ট্রপতির উপরেই চলে যাবেন।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিকপর্যায়ে বিভিন্ন দেশ কিভাবে চলে সেটা আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে যার যার কর্তব্য পালন করবে। বিচার বিভাগ তার দায়িত্ব পালন করবে। সকলের সাথে একটি সমন্বয় থাকতে হবে। তাহলেই রাষ্ট্র সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে।

“সেই জায়গাটা যদি নষ্ট করা হয়। উচ্চ আদালত থেকেই যদি এটা আসে, তাহলে সেটা দুঃখজনক।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা নিয়ে আইনমন্ত্রী আলাপ-আলোচনা করছেন। এই সমস্যাটা কিভাবে সমাধান করা যায়, তার যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করি, আমাদের বিচারক যারা আছেন, তারাও বিষয়টি বুঝবেন যে কোনো আদালতই নিজে নিজকে প্রমোট করা বা কোনোভাবে লাভবান বা বেনিফিসিয়ারি করা সম্পূর্ণ এথিকসের বাইরে।”