হ্যাপীর রিট খারিজ, খেলায় থাকছেন রুবেল

ক্রিকেটার রুবেল হোসেনকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়ার জন্য অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপীর দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2015, 10:50 AM
Updated : 6 Jan 2015, 05:30 PM

বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ মঙ্গলবার রিট আবেদনটি খারিজ করেন।

এদিন তিন দফায় আবেদনটি শুনানির জন্য উঠলে হ্যাপীর আইনজীবী মো. ইউনুস আলী আকন্দ কোনো বারই উপস্থিত না থাকায় আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেয় বলে রুবেলের আইনজীবী মনিরুজ্জামান আসাদ জানান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রথমে বেলা ১২টায় আবেদনটি শুনানির জন্য উঠলে আইনজীবী আকন্দ আদালতে ছিলেন না। এরপর বেলা আড়াইটায় ও বিকাল ৪টায় আবেদনটি শুনানির জন্য হ্যাপীর আইনজীবীকে আদালতে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দিলেও তিনি না আসায় বিচারকরা তা খারিজ করে দেন।

এ বিষয়ে হ্যাপীর আইনজীবী মো. ইউনুস আলী আকন্দ বলেছেন, এভাবে রিট আবেদন খারিজ হলে তা পুনরুজ্জীবিত করা যায়।

“আমরা মামলা পুনরুজ্জীবনের আবেদন করব। তারপর আবার শুনানি করব।”

সম্প্রতি রুবেলের বিরুদ্ধে ‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক’ গড়ার অভিযোগে থানায় মামলা করে আলোচনায় আসেন চলচ্চিত্র নায়িকা হ্যাপী।

তার ওই মামলায় জামিনে থাকা রুবেল আসন্ন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন।

সোমবার হ্যাপীর পক্ষে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়, যাতে রুলের পাশাপাশি রুবেলকে জাতীয় দল ও বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ দিতে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রুবেলকে দলছাড়া করার পাশাপাশি মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার পাসপোর্ট জব্দ করার আবেদনও করেন হ্যাপী।

রুবেলের হাত থেকে হ্যাপীর ‘জীবন রক্ষায়’ পুলিশি নিরাপত্তা দিতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না- তা জানতে রুল চাওয়া হয় ওই আবেদনে।

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল ও বিশ্বকাপ দল থেকে রুবেলের নাম বাদ দিতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং হ্যাপীর মামলার তদন্ত ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত রুবেলের পাসপোর্ট কেন জব্দ করতে বলা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় আরেকটি রুল।

স্বরাষ্ট্র সচিব, ক্রীড়া সচিব, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম, ক্রিকেটার রুবেল হোসেন, নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এবং মিরপুর মডেল থানার ওসিকে রিটে বিবাদী করা হয়।

হ্যাপী আদালতে গিয়ে এই মামলার এফিডেভিট করেন বলে সোমবার জানিয়েছিলেন ইউনুস আলী আকন্দ।

গত ১৩ ডিসেম্বর রুবেলের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মিরপুর থানায় মামলা করার পর পুলিশের ব্যবস্থাপনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হ্যাপীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়।

ওই পরীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি হ্যাপীকে জোর করে যৌন সম্পর্কে বাধ্য করা হয়েছে, এমন কোনো আলামত চিকিৎসকরা পাননি।

২১ বছর বয়সী হ্যাপীর দাবি, ফেইসবুকের মাধ্যমে প্রায় এক বছর আগে তার সঙ্গে পরিচয় হয় রুবেলের। বিয়ের কথা বলে নয় মাস ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখছিলেন রুবেল।

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী হ্যাপী ‘কিছু আশা কিছু ভালবাসা’ চলচ্চিত্রে প্রধান অভিনেত্রীর ভূমিকায় ছিলেন। তার অভিনীত আরও কয়েকটি চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায়।

তার অভিযোগ, রুবেল অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার পর তাকে এড়িয়ে চলায় তিনি আইনের আশ্রয় নেন।

হ্যাপী মামলা করার দুই দিন পরই হাই কোর্ট থেকে চার সপ্তাহের জামিন নেন জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল।

হ্যাপীর অভিযোগ নাকচ করে তিনি বলে আসছেন, এই তরুণী তাকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করছে।

হ্যাপীর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ পারভেজের আবেদনে গত ৩১ ‍ডিসেম্বর ঢাকার একটি আদালত রুবেল হোসেনের ডিএনএ পরীক্ষারও অনুমতি দিয়েছে।