চেতনাবিরোধী হলে ‍মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নয়: মন্ত্রী

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হলেও সংবিধানের প্রতি আনুগত্যহীন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত কাউকে ‍মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি দেওয়া হবে না বলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2014, 03:36 PM
Updated : 11 Dec 2014, 03:36 PM
চট্টগ্রাম নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু আপনার (মুক্তিযোদ্ধার) সন্তানকে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হতে হবে, সংবিধানের প্রতি আনুগত্য থাকতে হবে।

“জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত থাকলে, দেশবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত থাকলে কোটার সুযোগ দেওয়া হবে না।”

তিনি বলেন, “বিভিন্ন স্থানে গেলে মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত ৩০ শতাংশ কোটা শেষ হয়েছে কি না তা প্রশ্ন করেন একাত্তরের রণাঙ্গনের সৈনিকেরা।

“এখন থেকে যেসব মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটায় চাকরি হয়েছে তাদের নাম, ঠিকানা, কার সন্তান সব কিছু মন্ত্রণালয়ে জমা রাখা হবে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে কার কার চাকরি হয়েছে।”

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, “ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজে যাতে কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে না পারে তার জন্য প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নির্ণয় করতে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে।”

জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে  মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, “এ ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আবারো মুক্তিযোদ্ধাদের একাত্তরের মতো ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে মোজাম্মেল হক বলেন, “আমার এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় খালেদা জিয়া বলেছিলেন, তিনি নতুন করে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করবেন।

“বিনয়ের সাথে বেগম খালেদা জিয়াকে বলতে চাই, একাত্তরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে কারা কারা ছিলেন তার তালিকা আপনি তৈরি করতে পারবেন। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করতে পারবেন না।”

তিনি বলেন, “একাত্তরে মানুষ যখন দলে দলে দেশ ছাড়ছেন তখন খালেদা জিয়া পরম ভরসায় ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করছিলেন। তাই তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নয়, ক্যান্টনমেন্টে যারা ছিল তাদের তালিকা তৈরি করতে পারবেন।”

মন্ত্রী বলেন, “এম এ হান্নান কালুরঘাট থেকে প্রথম মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা পাঠ করেন। জিয়াউর রহমান ছিলেন চতুর্থ ব্যক্তি। মিথ্যা ইতিহাস তৈরি করে খলনায়ককে নায়কের সমকক্ষ করা হচ্ছে।”

মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য পরিচয়পত্র ও সনদ প্রস্তুত করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিচয়পত্র দিয়ে যে কোনো জায়গায় যথাযোগ্য মর্যাদা ‍পাবেন মুক্তিযোদ্ধারা।

আর সনদ জালিয়াতি রুখতে সনদে নয় ধরনের ‘বারকোড’ দেওয়া থাকবে বলে জানান তিনি।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের প্রথম ভাইস-চেয়ারম্যান ইসমত কাদির গামা, ভাইস চেয়ারম্যান এস এম মরতুজা হোসাইন, চট্টগ্রাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শাহাবউদ্দিন ও চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোজাফফর আহমদ  উপস্থিত ছিলেন।