স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী আশরাফের ওই বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কল্যাণ পার্টির সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ফখরুল বলেন, “সরকারের মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাহেব বাংলাদেশে সফর করে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিশা দেশাই বিসওয়ালকে দুই আনার মন্ত্রী বলে সম্বোধন করেছেন। সেদেশের রাষ্ট্রদূতকে কাজের মেয়ে মর্জীনা বলেছেন।
“এতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সর্ম্পক আরো ক্ষতিগ্রস্ত হলো বলে আমরা মনে করি। অর্থাৎ কি না দুই দেশের সর্ম্পক ভালো নেই।”
গত মাসের শেষ দিকে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল।
সফরের দ্বিতীয় দিন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে বৈঠকে বিসওয়াল বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন কবে হবে তা জানতে চেয়েছেন বলে জাতীয় পার্টির এক নেতা জানিয়েছেন।
পরদিন খালেদা-বিসওয়ালের বৈঠক নিয়ে খুলনায় এক সমাবেশে সৈয়দ আশরাফ বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই আনা, চার আনাও না— এক মন্ত্রী আছে নিশা দেশাই। ভারতীয় বংশোদ্ভূত, যদিও সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। নিশা দেশাই বিসওয়ালের দিকে হাত পেতে বসে আছেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে দুই দুইবারের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে টেলিভিশনে দেখে মনে হয় ২২/২৩ বছরের মেয়ের সামনে খালেদা জিয়া একদম শিশু।”
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে চেষ্টা করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
মজীনাকে ‘কাজের মেয়ে মর্জিনা’ সম্বোধন করে তিনি বলেন, “কয়দিন আগে উনি (খালেদা জিয়া) ছিলেন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে। মজীনা তো কত চেষ্টা করলো নির্বাচনটা বন্ধ করার জন্য, শেখ হাসিনা যাতে প্রধানমন্ত্রী না হতে পারে তার জন্য। এমন কোনো প্রচেষ্টা নেই- তিনি করেননি। আল্লাহর ওয়াস্তে সবশেষে চাকরির মেয়াদও শেষ, ক্ষমতাও শেষ। আগামী সপ্তাহে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেবেন। জীবনে হয়তো আর বাংলাদেশে আসবেনও না। বাংলাদেশ কিন্তু ওই অবস্থায় নেই যে, কাজের মেয়ে মর্জিনা বাংলাদেশের ক্ষমতার রদবদল করবে।”
আন্তর্জাতিক মহলে সরকারের কোনো সমর্থন নেই দাবি করে তিনি বলেন, “এই সরকারের আজ বিদেশে কোনো বন্ধু নেই। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের জনশক্তি কমে যাচ্ছে। অনেকে ফিরে আসছে।
“ব্যবসা-বাণিজ্যের কী অবস্থা! ব্যবসায়ীরা বসে আছেন। দেশে ভয়াবহ এক মন্দা ভাব সৃষ্টি হয়েছে।”
আর একটি আন্দোলনের ‘ধাক্কায়’ সরকারের পতন ঘটবে-মন্তব্য করে নেতাকর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, মহানগর সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ডিএলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানসহ পার্টির কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা বক্তব্য রাখেন।