নিরাপত্তাহীনতায় হল ছাড়ছে না ইবি শিক্ষার্থীরা

দুর্ঘটনায় ছাত্রের মৃত্যুতে বিক্ষোভ-তাণ্ডবের পর কর্তৃপক্ষ হল ছাড়তে নির্দেশ দিলেও ধর্মঘটে পরিবহন সংকট ও হামলার আশঙ্কায় বেরুতে পারছেন না কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2014, 01:10 PM
Updated : 1 Dec 2014, 01:10 PM

রোববার দুপুরে ক্যাম্পাসে দুটি বাসের মধ্যে চাপা পড়ে মারা যান বায়ো-টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান টিটু।

এঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়য়ে নিজস্ব ও ভাড়া করা মিলে প্রায় অর্ধশত গাড়ি ভাংচুর করে ও পুড়িয়ে দেয়। এর পর কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের হল ছাড়তে বলে।

এর মধ্যে বাস পোড়ানোর প্রতিবাদে জেলার পাঁচটি পরিবহন সংগঠন ধর্মঘট ডাকে। এর ফলে কুষ্টিয়া- খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে অজ্ঞাত দেড় থেকে দুই হাজার জনকে আসামি করে ইবি পুলিশ একটি মামলা করেছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে কিছু শিক্ষার্থী হল ছাড়লেও পরিবহন সংকট ও ধর্মঘট পালনকারীদের হামলার ভয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই হল থেকে বের হচ্ছে না।

খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাজমা খানম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরিস্থিতি শান্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল ত্যাগের নির্দেশ দিলেও ছাত্র/ছাত্রীরা কীভাবে নিরাপদে বাড়ি ফিরবে সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”

একই হলের আবাসিক ছাত্রী জেসমিন জানান, “ক্যাম্পাসের বাইরে গেলেই পরিবহন ধর্মঘটীদের হামলা ও ছিনতাইয়ের আশঙ্কায় ভুগছেন।”

এর মধ্যে সকালে হল ছেড়ে বের হওয়ার পর এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে।

সাদ্দাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছাইফুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে হল ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার পথে তিনি ক্যাম্পাসের গেইটের বাইরে যেতেই একদল লোক লাঠিসোটা নিয়ে তাকে ঘেরাও করে সাথে থাকা ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেয়।

পরিবহন ধর্মঘট সমর্থকদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের হামলার আশঙ্কার বিষয়ে জানতে পরিবহন মালিক সমিতির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলতে মোবাইল ফোনে কল করলেও তারা ফোন ধরেননি।

এবিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি মহিবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হলত্যাগী ছাত্র/ছাত্রীরা বাড়ি ফেরার পথে পরিবহণ না থাকায় সমস্যা হচ্ছে বলে শুনেছি। তবে তারা পরিবহন ধর্মঘটকারীদের দ্বারা হামলা বা আক্রমণের শিকার হয়েছে এমন অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শাহিনুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে হল ছেড়ে বাড়ি ফিরতে পারে তা বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই তাদের হল ছাড়ার বিষয়ে বিবেচনা করছে কর্তৃপক্ষ।”