Published : 23 Nov 2014, 08:27 PM
এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে রোববার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান বলে ইমিগ্রেশন পুলিশ জানিয়েছে।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি বিমানবন্দর ছাড়েন বলে গোয়েন্দা পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান।
তবে বিমানবন্দর থেকে তিনি কোথায় গেছেন সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
লতিফ সিদ্দিকীর মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি। ধানমণ্ডির বাড়িতেও তিনি ওঠেননি বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে এক সভায় হজ নিয়ে বক্তব্যের জেরে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন লতিফ সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য পদ থেকেও তাকে সরানো হয়।
হজ নিয়ে মন্তব্যের জন্য ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে ওই অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী বলেছিলেন, “আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীর যতটা বিরোধী, তার চেয়ে বেশি হজ আর তাবলিগের বিরোধী। ”
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষ হজে যাওয়ায় দেশের অর্থ আর শ্রম শক্তির ‘অপচয়’ হয়।
ফাইল ছবি
তার এই বক্তব্য প্রচার হলে তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
বিভিন্ন ইসলামী দল লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি তোলে। তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায় বিএনপি। বিভিন্ন স্থানে এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলাও হতে থাকে।
এরই মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয় লতিফ সিদ্দিকীকে। আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও তাকে বাদ দেওয়া হয়।
এরপর থেকে লতিফ সিদ্দিকী পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছিলেন বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়।
টাঙ্গাইলে প্রভাবশালী সিদ্দিকীদের জ্যেষ্ঠ ভাই ৭৭ বছর বয়সী লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য হয়েছেন।
গত মহাজোট সরকারের পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন লতিফ সিদ্দিকী। শেখ হাসিনা টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর চলতি বছরের শুরুতে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি।
ষাটের দশকে বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামের দিনগুলোতে একাধিকবার কারাগারে যেতে হয় বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য লতিফ সিদ্দিকীকে।
ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে ১৯৬৪-৬৫ সালে করটিয়া সাদত কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ৬৬ সালের ছয় দফা ও ৬৯ সালের গণঅভ্যূত্থানে সক্রিয় এই নেতা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হিসাবে ভূমিকা রাখেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক শাসনামলে মুক্তিযোদ্ধা লতিফ সিদ্দিকীকে প্রায় ছয় বছর কারাগারে কাটাতে হয়। এরশাদের আমলে স্ত্রী লায়লা সিদ্দিকী জাতীয় পার্টির নারী সাংসদ হওয়ার পর মুক্তি পান তিনি।