কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সরানোর পরিকল্পনা

কক্সবাজারের কুতুপালং ও নয়াপাড়া শরণার্থী শিবির ‘সুবিধাজনক’ অন্য কোনো স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2014, 09:31 AM
Updated : 6 Nov 2014, 12:00 PM

বৃহস্পতিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

পরে তার প্রেস সচিব একেএম শামিম চৌধুরী সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানান।

জাতিগত ও রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে প্রায় দুই দশক আগে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢোকা শুরু করে।

কুতুপালং ও নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে ৩৪ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গা রয়েছেন। এর বাইরে আরো প্রায় দুই থেকে তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গারা বিদেশে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মিয়ানমার হয়ে মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও গণমাধ্যমের তথ্য। 

প্রেস সচিব জানান, ওই দুটি শিবিরে রোহিঙ্গারা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য  হচ্ছেন বলে আরো কোনো প্রশস্ত স্থানে তাদের সরিয়ে নেয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, কক্সবাজার সৈকতের কাছে বর্তমান ক্যাম্পের জমি পর্যটনের উন্নয়নে কাজে লাগানো যেতে পারে।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এর আগে গত অগাস্টে জানান, দীর্ঘ নয় বছর বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আবার শুরু হচ্ছে। শিগগিরই তালিকাভুক্ত দুই হাজার ৪১৫ জন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করছে মিয়ানমার সরকার।

বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে তাদের ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানানো হলেও ২০০৫ সালের পর থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধ থাকে। তার আগ পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ফিরিয়ে নেয় বলে কর্মকর্তারা জানান।

২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যের বৌদ্ধ ও মুসলিমদের মধ্যে ভয়াবহ জাতিগত দাঙ্গার পর নতুন করে রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশে প্রবেশের চেষ্টা করতে শুরু করে এবাং আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।

এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর মর্যাদা দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানানো হলেও সরকার তাতে সায় না দিয়ে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে জোর দেয়।