সোমবার যুদ্ধাপরাধী মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিলের রায় ঘোষণার সময় ওই ঘটনা ঘটে। বিচারকের নির্দেশে আদালত থেকে বেরিয়ে এসে নিজের ফেইসবুকে এই ‘ব্যাখ্যা’ দেন দৈনিক নিউ এইজের এই বিশেষ প্রতিনিধি, বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্যের কারণে এর আগে যাকে একাধিকবার সতর্ক করেছিল আদালত।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এসকে সিনহা নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ সোমবার কামারুজ্জামানের মামলার আপিলের রায় ঘোষণা করেন, যাতে ফাঁসির রায় বহাল রাখা হয়।
রায় পড়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ নাগরিক বার্গম্যান আদালত কক্ষেই মোবাইল ফোনে কথা বলতে শুরু করেন।
বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী এ সময় তাকে দাঁড়াতে বললে বার্গম্যান উঠে দাঁড়ান।
বিচারক তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আদালতকক্ষে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢোকাই নিষিদ্ধ। আপনি মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকেছেন, আবার কথাও বলছেন।”
এরপর বিচারক আদালত কক্ষ থেকে বার্গম্যানকে বেরিয়ে যেতে বলেন।
এর ঘণ্টাখানেক পর নিজের ফেইসবুক পৃষ্ঠায় বার্গম্যান ইংরেজিতে লেখেন, “অভ্যাসবশেই পকেট থেকে ফোন বের করেছিলাম, আর বিচারপতি মানিক (বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী) হঠাৎ করেই ধমকে উঠলেন। বললেন, আদালতে ফোন আনা নিষিদ্ধ, আমাকে নাকি আগেও সতর্ক করা হয়েছে।
“আমি বললাম, ইয়োর অনার, আমাকে আগে সতর্ক করা হয়নি। এ সময় আমাকে বলা হলো- আদালতের বাইরেই একটি নোটিশ দেওয়া আছে।”
আর এ কথার পরই বিচারক তাকে আদালত থেকে বের করে দেন বলে ফেইসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন বার্গম্যান।
“আদালতের ফটকে নিরাপত্তারক্ষীরা যেহেতু পরীক্ষা করেনি, সেহেতু আমার মনে হয় সবার পকেটেই একটা করে ফোন ছিল। আর আমি নিশ্চিত নই, ওই নোটিসের বিষয়ে কেউ জানে কি না, জানলেও মানে কি না।
“যাই হোক, পকেট থেকে বের করে আমিই কেবল বেকুব হলাম!!”
ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন বিষয়ে ব্লগে ‘আপত্তিকর মন্তব্য’ করায় বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার একটি অভিযোগ বর্তমানে বিচারাধীন। আগামী ১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে এর রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।
ডেভিড বার্গম্যান সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের মেয়ে আইনজীবী সারা হোসেনের স্বামী। যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে লেখালেখির জন্য বিচারপ্রার্থী আন্দোলনের কর্মীদের কাছেও সমালোচিত তিনি।