রায়ে সন্তোষ, দ্রুত কার্যকরের আশা আইনমন্ত্রীর

যুদ্ধাপরাধে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে শিগগিরই তা কার্যকরের আশা প্রকাশ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Nov 2014, 06:45 AM
Updated : 2 Nov 2014, 11:25 AM

রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর শুরা সদস্য মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রী বলেন, “রায়ে আমি খুবই আনন্দিত।”

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আনিসুল হক বলেন, “আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যারা হিংস্র বিরোধিতা করেছিল এতদিনেও বিচারের মাধ্যমে তাদের শাস্তি দিতে পারিনি।

“এখন আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে তাদের (যুদ্ধাপরাধী) আজকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দোষী সাব্যস্ত করে আমরা শাস্তি দিতে পারছি-এটা হচ্ছে আমাদের বিরাট প্রাপ্তি।”

মীর কাসেমের রায় শিগগির কার্যকরের আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমি মনে করি সত্যি সত্যি এসব পাপীদের রায় কার্যকর খুব শিগগিরই হোক- সেই আশায় থাকব।”

পরে গুলশানের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী বলেন, “বিচার বিভাগ স্বাধীন, কিন্তু আমি প্রসিকিউশনের যে বক্তব্য শুনেছি তাতে আমি যেটুকু আঁচ করতে পেরেছি তাতে মনে হয়েছে-মীর কাসেমের মামলাটা তারা যথেষ্ট শক্ত ভিত্তির উপরে দাঁড়িয়ে সাজা আদায় করেছে।

“সেক্ষেত্রে আমি বলব এই সাজা আদায়ে প্রসিকিউশন যে চেষ্টা করেছে এটার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে এবং এই রায় বাস্তবায়ন করার জন্য যতটুকু চেষ্টা করার ততটুকু করব।”

একাত্তরে চট্টগ্রামে নৃশংসতা চালিয়ে ত্রাস সৃষ্টিকারী আলবদর, রাজাকার ও আল শামস বাহিনীর নেতৃত্ব দেন মীর কাসেম আলী। স্বাধীন বাংলাদেশে তার যোগানো অর্থে জামায়াতে ইসলামী শক্ত আর্থিক ভিত্তি পায়।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ১৯৮৫ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অর্থৎ মজলিসে শুরার এই সদস্যের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনের ১৪টি অভিযোগের আটটি সন্দেহাতীতভাবে ও দুটি আংশিক প্রমাণিত হয়েছে। ওই দুটি অভিযোগেই তার ফাঁসির রায় এসেছে।

‘সাঈদীর ফাঁসি পাওয়ার মত মামলা হয়নি’

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়ার মত মামলা প্রসিকিউশন উপস্থাপন করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী।

তবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আপিল বিভাগ সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিলেও প্রসিকিউশনকে ব্যর্থ বলতে নারাজ তিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, “দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় নিয়ে নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কথা বলেছেন। ইনভেস্টিগেশনে যারা ছিলেন তারাও আজ (রোববার) কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, সাক্ষ্য প্রমাণের যতটুকু প্রয়োজন ছিল সেখানে হয়ত কিছুটা ঘাটতি ছিল।

“ঘাটতি কোথাকার ছিল সেটা হচ্ছে ফাঁসি পাওয়ার মত মামলা হয়তো উনারা সাজাতে পারেননি-তৈরি করতে পারেননি। তৈরি করা মানে হচ্ছে- প্রসিকিউশনকে মামলার সাক্ষী-সাবুত প্রস্তুত করে দিতে হয়।

“সেই ক্ষেত্রে আমি বলব- সর্বোচ্চ সাজা পাওয়ার মত মামলা (সাঈদী) ছিল, কিন্তু সর্বোচ্চ সাজা পাওয়ার মত মামলা করা হয়েছিল কি না সেটা প্রসিকিউশন বলছেন কিছু দুর্বলতা ছিল। সেটাকে যখন সর্বোচ্চ আদালত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার করে রায় দিয়েছেন সেটা দুঃখিত হলেও আমরা তা মেনে নিতে পারিনি।”

সাঈদীর সর্বোচ্চ সাজা আদায় করতে না পারায় প্রসিকিউশন ব্যর্থ কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “দ্যাখেন, কতগুলো মামলা উনারা করেছেন? এরমধ্যে একটি মামলায় আশা অনুযায়ী কিছুটা প্রাপ্তি হয়নি। এরপরেও যদি তাদের ব্যর্থ বলা হয় তাহলে আমার মনে হয় তাদের প্রতি অবিচার করা হবে।”