‘সর্বোচ্চ শাস্তিই তার প্রাপ্য’

একাত্তরে চট্টগ্রামের বদরপ্রধান মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের রায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড’ প্রত্যাশা করছেন সে সময়ে নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের স্বজনরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Nov 2014, 06:47 AM
Updated : 1 Nov 2014, 06:47 AM

তারা বলছেন, কাসেম আলীর নেতৃত্বে আলবদর বাহিনী চট্টগ্রামের টেলিগ্রাফ অফিস সংলগ্ন ডালিম হোটেলসহ ‘টর্চারসেল’ গুলোতে মুক্তিযোদ্ধা, তাদের স্বজন এবং স্থানীয় সংখ্যালঘুদের ধরে এনে নির্যাতন ও হত্যা করেছেন। তার সর্বোচ্চ শাস্তিই হওয়া উচিত।

জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও দলটির অন্যতম প্রধান অর্থ জোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে করা মামলায় মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনের মতো ১৪টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

রোববার ইসলামী ছাত্রশিবিরের এই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির মামলার রায়ের দিন রয়েছে।

একাত্তরের নভেম্বরে নগরীর চান্দগাঁও এলাকা থেকে মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে আলবদর সদস্য ও পাকসেনারা ধরে আনেন চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মো. এমরানসহ আরও অনেককে।

ডালিম হোটেলেই তাদের অকথ্য নির্যাতন করা হয়। মীর কাসেম আলীর নির্দেশেই চলতো নির্যাতন, ইলেকট্রিক শক। ১৬ ডিসেম্বর সকালে ওই টর্চার সেল থেকে অনেকের সঙ্গে মুক্ত হন তিনি। 

ট্রাইব্যুনালে কাসেমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন সৈয়দ মো. এমরান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “একাত্তরে বদর কমান্ডার মীর কাসেম চট্টগ্রাম শহরে যে অপরাধ করেছেন মৃত্যুদণ্ড ছাড়া অন্য কোন শাস্তি প্রত্যাশা করা যায় না। আশা করছি রোববারের রায়ে মৃত্যুদণ্ডই হবে।”

ডালিম হোটেলে নির্যাতিত আরেক মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, “সে যে অপরাধ করেছে মৃত্যুদণ্ডও পর্যাপ্ত নয়।”

ফাইল ছবি

সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের দায়মুক্তি ঘটবে বলেও মনে করেন তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দেওয়া জাহাঙ্গীর।

মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক নাসির উদ্দিন চৌধুরীও ডালিম হোটেলের টর্চার সেলে নির্যাতনের শিকার। মীর কাসেমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনিও।

নাসির উদ্দিন বলেন, তার পাপের পাল্লা এত ভারি যে ফাঁসি দিলেও তার শাস্তি যথাযথ হবে না।

বর্তমানে চট্টগ্রামের স্থানীয় দৈনিক পূর্বদেশের নির্বাহী সম্পাদক নাসির উদ্দিন।

“৪০ বছর পর বিচার হচ্ছে। সেসময়ে নির্যাতনকারী বদর বাহিনীর অনেককেই পাওয়া অসম্ভব। যার নেতৃত্বেই অত্যাচার নির্যাতন এবং হত্যার ঘটনা ঘটেছে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিলে একটা বড় কাজ হবে।”

মীর কাসেমের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া অপর সাক্ষী ফয়েজ আহমেদ সিদ্দিকীও মীর কাসেমের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করেন।

ফয়েজ আহমেদ সিদ্দিকীর দুলাভাই মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক গণতন্ত্রী পার্টির সাবেক সভাপতি প্রয়াত সাইফুদ্দিন খানকে ডালিম হোটেলে ধরে নিয়ে গিয়ে মীর কাসেম আলীর নির্দেশে নির্যাতন করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরু বাঙালি মীর কাসেমকে চট্টগ্রামে বদর বাহিনীর নির্যাতন ও হত্যা পরিকল্পনার ‘রিং মাস্টার’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “মৃত্যুদণ্ড ছাড়া তার আর অন্য কোন শাস্তি হতে পারে না।”