দেশে ফিরতে না পারলে কলকাতা বা শান্তি নিকেতনে থাকতে চান লতিফ সিদ্দিকী, হজ নিয়ে এক মন্তব্যের জন্য মন্ত্রিত্ব ও দল হারিয়েছেন যিনি।
Published : 26 Oct 2014, 08:01 PM
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের প্রস্তাব পেলেও তা ফিরিয়ে দিয়েছেন জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা লতিফ বলেছেন, দেশে ফিরতে না পারলে ‘বাঙালি পরিবেশেই’ থাকতে চান তিনি।
এক্ষেত্রে কলকাতা বা শান্তিনিকেতনই তার প্রথম পছন্দ। এখানে থেকে লেখাপড়া ও গবেষণায় মন দিতে চান প্রবীণ এই রাজনীতিক।
ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাশগুপ্তকে রোববার একথা বলেন লতিফ সিদ্দিকী।
“আমি যেতে পারি। কারণ আমি সবকিছু হারালেও আমার সংসদ সদস্য পদ এখনো রয়েছে, নির্বাচন কমিশন তা বাতিল করেনি,” দেশে ফেরা নিয়ে লতিফ একথা বলেছেন বলে জানান সুখরঞ্জন।
দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকতে চান না বলেও বাংলাদেশের সাবেক ডাক ও টেলিযোগযোগ মন্ত্রী লতিফ জানিয়েছেন।
সুখরঞ্জন জানান, বাংলাদেশের এই প্রবীণ রাজনীতিবিদকে দিল্লিতে থাকার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি কলকাতা বা শান্তিনিকেতনই পছন্দ করছেন।
ফাইল ছবি
হজ নিয়ে যে মন্তব্যের জন্য ‘সবকিছু হারিয়েছেন’ তা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার জন্য ছিল না বলে জানান লতিফ সিদ্দিকী।
“অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমি ওই কথা বলেছিলাম, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার জন্য বলিনি। আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে প্রচার করা হয়েছে।”
গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী বলেন,“আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী।”
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষ হজে যাওয়ায় দেশের অর্থ আর শ্রম শক্তির ‘অপচয়’ হয়। উৎপাদনে প্রভাব পড়ে।
এরপর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘স্পষ্টভাষী ও আত্মম্ভরী’ হিসেবে পরিচিত ৭৭ বছর বয়সী লতিফকে নিয়ে বাংলাদেশে শুরু হয় তুমুল আলোচনা।
বিভিন্ন জেলায় এই রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা হয়, জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এ পরিস্থিতিতে নিজের দলেই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে নির্বাচিত চার বারের সংসদ সদস্য লতিফ।
গত ১২ অক্টোবর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তাকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ২৮ অক্টোবর প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ।
তার গ্রেপ্তার ও বিচার চেয়ে রোববার হরতালও করেছে কয়েকটি ইসলামী দল।