যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভরত গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের ওপর চড়াও হয়েছে পুলিশ।
Published : 17 Sep 2014, 12:08 PM
পুলিশের ছোড়া কাঁদুনে গ্যাস ও গরম জলে মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে ঘটনাস্থল থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক সুজন মণ্ডল জানিয়েছেন।
কাঁদুনে গ্যাসে তিনি নিজেও আহত হয়েছেন জানিয়ে সুজন বলেন, পুলিশ দফায় দফায় জলকামান থেকে গরম জল ছোড়ে; সঙ্গে নিক্ষেপ করা হয় কাঁদুনে গ্যাসের শেল। ওই এলাকায় কাউকে দাঁড়াতে দেয়া হচ্ছিল না।
ইমরানসহ চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তারা কাঁদুনে গ্যাসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।”
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীর আপিলের রায়ে সাজা কমিয়ে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
বুধবার সকালে আপিল বিভাগ এই রায় ঘোষণার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শাহবাগে অবস্থান নিয়ে থাকা গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আঁতাত করে এই রায় দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
‘আঁতাতের এই রায় মানি না/প্রহসনের এই রায় মানি না’, ‘আপোসকারীর আস্তানা/জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেয় তারা।
ওই এলাকায় বিক্ষোভ-মিছিলের পর এক পর্যায়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। ঘণ্টাখানেক পর তাদের উপর চড়াও হয় পুলিশ।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পর তার ফাঁসির দাবিতে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে গড়ে উঠে শাহবাগের এই আন্দোলন।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর সাজা কমিয়ে দেয়া আপিল বিভাগের রায় প্রত্যাখ্যান করে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আঁতাত করে এই রায় দেয়া হয়েছে। এটা পরিকল্পিত, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক।”
এই রায়ের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্ম যাতে আন্দোলন করতে না পারে সেজন্য গত এক বছর ধরে গণজাগরণ মঞ্চে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। ট্রাইব্যুনালে রায় হয় ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, যাতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।