মীনা অ্যাওয়ার্ড পেলেন মনির ও মামুন

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের জন্য এ বছর ‘মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন মনির হোসাইন ও মামুনুর রশীদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2014, 12:33 PM
Updated : 16 Sept 2014, 12:33 PM

গণমাধ্যমে শিশু অধিকার বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য এ বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৩৬ জনকে চলতি বছর এ পুরস্কার দেয়া হয়।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত অভনেত্রী আরিফা জামান মৌসুমী ও বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি প্যাসকেল ভিলনেভ মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের অর্থ, সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শিশু সাংবাদিকতার সাইট ‘হ্যালো’র মনির হোসাইন এবার রিপোর্টিং (১৮ বছরের নিচে, প্রিন্ট) বিভাগে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।

অবহেলিত পথশিশুদের নিয়ে লেখা ‘কে ফেরাবে?’ শিরোনামে মনিরের সেই পুরস্কারজয়ী প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালের ১৫ অক্টোবর।

একই বছরের ২৫ জুন প্রকাশিত ‘৬ মাসেও বই পায়নি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনের জন্য রিপোর্টিং (১৮ বছরের বেশি) বিভাগে তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন মামুনুর রশীদ।

মনির হোসাইন পুরস্কার হিসাবে ২৫ হাজার টাকা, সনদ ও ক্রেস্ট পেয়েছেন। আর সনদ ও ক্রেস্টের সঙ্গে ১৫ হাজার পেয়েছেন মামুন।

অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় হ্যালোর সম্পাদক অনিন্দ্য রহমান বলেন, “এটা নিঃসন্দেহে একটি ভাল ঘটনা। শিশুদের আমরা সমাজ পরিবর্তনের নিয়ামক হিসেবে দেখতে চাই। কিন্তু সমাজ পরিবর্তন একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। সেক্ষেত্রে হ্যালোর শিশু সাংবাদিকের এই অর্জন একটি উল্লেখ্যযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।”

ইউনিসেফ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের যৌথ উদ্যোগের ফসল হচ্ছে বাংলা ভাষায় বিশ্বের প্রথম শিশু সাংবাদিকতার সাইট ‘হ্যালো’। 

মূলধারার গণমাধ্যমে শিশু-কিশোরদের মতামত ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতেই এই কার্যক্রমের আওতায় ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে শিশুরা সংবাদ সংগ্রহ থেকে শুরু করে সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করছে।

‘জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন’

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তার বক্তৃতায় শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি রাজনৈতিক কাজে শিশুদের ব্যবহারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য ইউনিসেফের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার ও জঙ্গিবাদ থাকলে শিশুদের অধিকার ব্যাহত হয়। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে শিশুদের বাঁচানো সম্ভব নয়।

“যারা বোমা বানানোর কাজে শিশুদের ব্যবহার করে, যারা শিশুদের মানব ঢাল বানায়- তাদের বিরুদ্ধে ইউনিসেফ ও জাতিসংঘের সোচ্চার হতে হবে। প্রতিবাদ না জানালে জাতিসংঘ, ইউনিসেফ দায়িত্ব পালন করছে না। এদের বিরুদ্ধে মুখ না খুললে সচেতন সমাজ তৈরি সম্ভব নয়।”

ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রধান প্যাসকেল ভিলেনিউভ বলেন, “আমি সাংবাদিকতা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের মতামত তুলে ধরার বিষয়ে গণমাধ্যমের চেষ্টা এবং চলমান উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। গণমাধ্যমের কাজের স্বীকৃতি দিতে পেরে আমরা গর্বিত।”

মূলত সৃজনশীল ও সাংবাদিকতা- এই দুই ক্ষেত্রে প্রিন্ট, টেলিভিশন ও রেডিও মাধ্যমের নির্দিষ্ট বয়সসীমার সংবাদকর্মীদের মীনা অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করা হয়। ইউনিসেফের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০০৫ সাল থেকে  এ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে।

এ বছর বিচারক প্যানেলে ছিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, সাংবাদিক ফরিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, ফাহমিদুল হক, চলচ্চিত্রকার জাকির হোসেন রাজু, সাংবাদিক কাদির কল্লোল, সামিয়া জামান ও রতন পাল।

আরো যারা পুরস্কার পেল

সৃজনশীল (প্রিন্ট, ১৮ বছরের নিচে) বিভাগে প্রথম হয়েছেন জান্নাতুল নাইম প্রীতি (গল্পের বই) এবং মীম নওশিন নাওয়াল খান (প্রথম আলো), দ্বিতীয় শামিম মিয়া (দৈনিক করতোয়া) এবং তৃতীয় জান্নাতুল ফেরদৌস স্নিগ্ধা (পুস্তিকা)।

সৃজনশীল (প্রিন্ট, ১৮ বছরের উপরে) বিভাগে প্রথম হয়েছেন আহমেদ রিয়াজ (কিশোর পত্রিকা), দ্বিতীয় আশিক মুস্তফা (সাত রং) এবং তৃতীয় নিলয় নন্দী (সাত রং)।

সংবাদ প্রতিবেদন (প্রিন্ট, ১৮ বছরের নিচে) বিভাগে প্রথম হয়েছেন জাহিদ ইসলাম (বরিশালের কথা), দ্বিতীয় মনির হোসেন (হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) এবং তৃতীয় রাবিয়া বর্ষা অনিতা (সত্য সংবাদ)।

সংবাদ প্রতিবেদন (প্রিন্ট, ১৮ বছরের উপরে) বিভাগে প্রথম হয়েছেন জাহিদুর রহমান (ফার্স্ট নিউজ), দ্বিতীয় শেখ সাবিহা আলম (প্রথম আলো) এবং তৃতীয় মামুনুর রশীদ (প্রতিবেদন প্রকাশের সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কর্মী)।

ছোটদের সৃজনশীল (টেলিভিশন, ১৮ বছরের নিচে) বিভাগে এবার কেউ পুরস্কার পাননি।

বড়দের সৃজনশীল (টেলিভিশন, ১৮ বছরের উপরে) বিভাগে প্রথম হয়েছেন সুশান্ত সিনহা (এটিএন নিউজ), দ্বিতীয় সোহেল রানা সবুজ (ইটিভি) এবং যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছেন লিটন অধিকারী রিন্টু (এটিএন নিউজ) ও শাহরিয়ার ইসলাম (আরটিভি)।

সংবাদ প্রতিবেদন (টেলিভিশন, ১৮ বছরের নিচে) বিভাগে প্রথম হয়েছেন শিফাত আল আমিন তন্ময় (ইটিভি), দ্বিতীয় সুমাইয়া ওয়াহাব (ইটিভি) এবং যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছেন এটিএন বাংলার তনিমা আক্তার ও তানজিলা আক্তার মিম।

সংবাদ প্রতিবেদন (টেলিভিশন, ১৮ বছরের উপরে) বিভাগে যৌথভাবে প্রথম হয়েছেন ওবায়দুল কবির (মাছরাঙা) ও খাদিজা নাহার রিতা (বৈশাখী টিভি), দ্বিতীয় মো. ইসমাইল হোসেন (গাজী টিভি) এবং তৃতীয় আতিকা রহমান (আরটিভি)।

সৃজনশীল (রেডিও, ১৮ বছরের নিচে) বিভঅগে প্রথম হয়েছেন এএমএম জোয়াদুল আলম (বরেন্দ্র রেডিও) এবং দ্বিতীয় হয়েছেন মো. শরিফুল ইসলাম শামীম (ঢাকা এফএম)। এ বিভাগে কেউ তৃতীয় পুরস্কার পাননি।

সৃজনশীল (রেডিও, ১৮ বছরের উপরে) বিভাগে প্রথম হয়েছেন গোলাম কিবরিয়া সরকার (এবিসি রেডিও), দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ আল মোহায়মেন (রেডিও মহানন্দা) এবং তৃতীয় হয়েছেন আবু তালেব সাকিব (রেডিও মাছরাঙা)।

সংবাদ প্রতিবেদন (রেডিও, ১৮ বছরের নিচে) বিভাগে প্রথম হয়েছেন বৈশাখী খাতুন (রেডিও ঝিনুক), দ্বিতীয় হয়েছেন রুপীয়া জাহান জুথী (রেডিও বিক্রমপুর)। এ বিভাগ থেকে কেউ তৃতীয় পুরস্কার পায়নি।

সংবাদ প্রতিবেদন (রেডিও, ১৮ বছরের উপরে) বিভাগে প্রথম হয়েছেন ফরিদ আহমেদ (বিবিসি বাংলা), দ্বিতীয় মো. মেহেদী হাসান (রেডিও পল্লীকণ্ঠ) এবং যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছেন মো. মাহাবুবুর রহমান (রেডিও টু ডে) ও আহমেদ ইউসুফ (রেডিও বিক্রমপুর)।