জনস্বার্থে করা একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির করে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বেঞ্চ রোববার এই রুল জারি করে।
দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানির জন্য দায়ীদের সনাক্ত ও শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন এবং ভবিষ্যতে নৌ দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে অভিজ্ঞ নৌ-স্থপতি, নৌ প্রকৌশলী, মাস্টার মেরিনার, পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ, নৌ পরিবহন বিষয়ক গবেষক এবং নৌযান মালিক ও যাত্রী প্রতিনিধিদের সমন্বয় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি জাতীয় তদন্ত কমিটি কেন গঠন করা হবে না- রুলে তা জানতে চায় আদালত।
পিনাক-৬ নামের ওই লঞ্চসহ সামগ্রিক নৌ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি রোধে ব্যর্থতার জন্য বিবাদীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হবে- তাও জানাতে বলা হয়েছে রুলে।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ১০ সরকারি কর্মকর্তাকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বাকি ছয় বিবাদী হলেন- বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান, পরিবহন পরিদর্শক (মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌপথ), মাওয়া নদীবন্দর কর্মকর্তা, সংস্থার বন্দর বিভাগের পরিচালক, নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক এবং নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগের পরিচালক।
অন্য দুই কর্তকর্তা হলেন- সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের পরিদর্শক (মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌপথ) এবং প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক (মাওয়া অঞ্চল)।
রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোতাহার হোসেন সাজু ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পূরবী রানী শর্মা ও খায়রুন নেসা। আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন মো. হারুন আর রশীদ।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ জাতীয় রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক আশীষ কুমার দে এবং সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুসার রেহমান গত ১৯ অগাস্ট এই রিট আবেদন করেন।
ওই সময় হাই কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে আবেদনটি তোলা হলেও অবকাশ শেষে গত রোববার রিটটি এ আদালতে নিয়ে আসেন আবেদনকারীর আইনজীবী।
মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাটে যাওয়ার পথে গত ৪ অগাস্ট পদ্মায় ডুবে যায় পিনাক-৬ নামের লঞ্চটি। আট দিনেও ডুবে যাওয়া লঞ্চের অবস্থান সনাক্ত করতে না পারায় স্থানীয় প্রশাসন গত ১১ অগাস্ট তল্লাশি অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে।
প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, লঞ্চডুবির পর এ পর্যন্ত ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছেন ৬১ জন।