হালনাগাদ: রোহিঙ্গা সতর্কতা ঢাকায়ও

ভোটার তালিকা হালনাগাদে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সতর্ক থাকায় এখন রোহিঙ্গারা কৌশল বদলে রাজধানীতেও ভোটার হওয়ার চেষ্টা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা নির্বাচন কমিশনের।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Sept 2014, 05:58 PM
Updated : 6 Sept 2014, 05:58 PM

তাই তা ঠেকাতে সর্বাত্মক সতর্কতা অবলম্বন এবং তথ্য সংগ্রহকারীদের বিশেষ নির্দেশনা দিচ্ছে ইসি সচিবালয়।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীসহ দেশের ১২০টি উপজেলায় গত সোমবার থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু হয়েছে। তৃতীয় ও শেষ ধাপের এ কাজ মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা দুই যুগ আগে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়ার পর তাদের অনেকে বাংলাদেশি ভোটার তালিকায় নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে।

এসব রোহিঙ্গারা পরে বিভিন্ন দেশে গিয়ে অপরাধমূলক তৎপরতায় অংশ নিয়ে ধরা পড়ার পর তাদের পরিচয় ফাঁস হয়। এরপর থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সতর্ক সরকার।

কক্সবাজারে দুটি শরণার্থী শিবিরে ২৫ হাজারের পাশাপাশি ৫ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে বলে মনে করা হয়।

সম্প্রতি হালনাগাদের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির এক সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সতর্ক থাকায় চট্টগ্রামে সফল হতে না পেরে রোহিঙ্গারা অন্য স্থানে গিয়ে ভোটার হওয়ার তৎপরতা চালাচ্ছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদসহ অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই উপস্থিত ছিলেন।

ফাইল ছবি

ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, “রোহিঙ্গারা অসাধু চক্রের সহায়তায় সমতল এলাকায় ভোটার হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা দেশের অন্য অঞ্চলের মতো ঢাকা মহানগরীতেও ভোটার হওয়ার চেষ্টা করবে।”

ইসির উপসচিব মতিয়ার রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, হালনাগাদে মহিলা ভোটার কমের বিষয়টি যাচাই এবং রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে রোববার নির্বাচন কমিশনে সভা ডাকা হয়েছে।

এদিকে হালনাগাদ কাজ পরিদর্শন করে এসে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক ও ইসি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন সিইসিকে দিয়েছেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর দেয়া ওই প্রতিবেদনে আবদুল মোবারক ভোটার তালিকা হালনাগাদে কর্মকর্তাদের অবহেলাকেই দায়ী করেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের পটিয়ায় রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা সতর্কতা অবলম্বন করেননি।

যে কারণে মহিলাদের নিবন্ধন কম

আবদুল মোবারকের প্রতিবেদনে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটার অন্তর্ভুক্তির হার ৪০ শতাংশ কম হওয়ায় অসন্তোষ জানানো হয়।

হালনাগাদ কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সভায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক জানান, বিদ্যমান ভোটার তালিকায় পুরুষ ও মহিলা ভোটার বৃদ্ধির হার প্রায় সমান। এবার পার্থক্যটা বেশি দেখা যাচ্ছে।

সভায় কর্মকর্তারা জানান, জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহে ফি নির্ধারণ করা ও তা সংগ্রহে বারবার ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়া, নিবন্ধন কেন্দ্রে যেতে মহিলাদের অনীহা, বিয়ে সংক্রান্ত কারণে গ্রামে মেয়েদের বয়স কম দেখানোর প্রবণতা, বিবাহিত মেয়েদের স্বামীর বাড়িতে ভোটার হতে বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়ত্রের কপি চাওয়া, রমজানে মহিলারা গৃহস্থালি কাজে ব্যস্ত থাকায় নারী ভোটার কম হয়েছে।

তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়িতে না গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার কারণেও নারীদের নিবন্ধন হার কম হয়েছে বলে মত দেন তারা।

বন্যার কারণেও ভোটার হতে নারীরা তেমন সাড়া দিচ্ছে না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

পুরুষের তুলনায় মহিলা ভোটার কম হওয়ার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করে দ্রুত সমাধানে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ নিতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের বলেছেন নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ।