তাজরীনের বীমার টাকা আদায়ে আন্দোলনের হুমকি নৌমন্ত্রীর

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত তোবা গ্রুপের পোশাক কারখানা তাজরীন ফ্যাশনসের বীমার টাকা আত্মসাতের চেষ্টা হচ্ছে অভিযোগ করে আইন অনুযায়ী তা পরিশোধের আহ্বান জানিয়েছেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2014, 11:46 AM
Updated : 5 Sept 2014, 12:31 PM

তা না হলে ‘আন্দোলনের মাধ্যমে’ বিমার টাকা আদায় করে গার্মেন্টস খোলার ব্যবস্থা হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ার করেছেন।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের এক সমাবেশে নৌমন্ত্রী বলেন, “তোবা গ্রুপের মালিক যে বীমা করেছিল তা মেরে দেয়ার চেষ্টা করছে কর্ণফুলী বীমা কোম্পানি।

“আমরা তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বসেছি। কিন্তু তারা কোনো দালিলিক প্রমাণ দিতে পারেনি। প্রয়োজনে কর্ণফুলী বীমার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলে সেখান থেকে টাকা তুলে তোবা গার্মেন্টস খুলে দেয়া হবে।

২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১১২ জন পোশাকশ্রমিক নিহত হন। আহত হন আরো কয়েকশ শ্রমিক।

নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক তাজরীনের ক্ষয়ক্ষতির জন্য কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স থেকে ১৮ কোটি টাকা আদায় করে দেয়ার জন্য তোবা মালিক দেলোয়ার হোসেনকে আশ্বাস দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবর।

গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাজরীনের অগ্নিকাণ্ডজনিত ক্ষয়ক্ষতি ‘দুর্ঘটনা নয়’ দাবি করে কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স দেলোয়ারের বীমার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

ওই ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে দেলোয়ারকে জেলও খাটতে হয়। তিন মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া পড়ার পর অন্দোলনে যান তোবা গ্রুপের আরো পাঁচ কারখানার কর্মীরা।

বকেয়া পরিশোধের কথা বলে গত জুলাই মাসে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান দেলোয়ার। শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ হলেও রাজধানীর বাড্ডায় তোবার ওই পাঁচ কারখানা বন্ধ করে রেখেছে মালিকপক্ষ। এর আগে বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করা তোবা গ্রুপ সংগ্রাম কমিটি এখন কারখানা খোলার দাবিতে আন্দোলন করছে।     

ফাইল ছবি

ওই আন্দোলনের বিষয়ে ইংগিত করে নৌমন্ত্রী বলেন, তোবার শ্রমিকদের দাবি আদায় নিয়ে ‘একটি চক্র মাঠ গরম করার’ চেষ্টা চালাচ্ছে।

“আমরা আবার তোবা গ্রুপ চালু দেখতে চাই। শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করে কারা তোবার মালিককে জেল থেকে বের করে নিয়ে আসল তা খতিয়ে দেখা দরকার।

শাজাহান খান বলেন, “গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তোবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। শ্রমিকদের আন্দোলনের মাধ্যমে অনেকে হঠকারীতা করতে চাইছে। অনেকে সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিক আন্দোলনকে ব্যবহার করতে চাইছে। শ্রমিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করছে।”

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নারও সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খান। 

তিনি বলেন, “আমার কাছে মান্না সাহেবের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। গার্মেন্ট মালিক হয়েও শ্রমিকদের বেতন না দেয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পরে আদালত থেকে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশও দেয়া হয়। কিন্তু তিনি এখন শ্রমিকদের দাবি নিয়ে কথা বলছেন। এটা খুবই অদ্ভুত একটি বিষয়।”