লক্ষ্মীপুর কারাগারে ঘটা করে তাহেরপুত্রের বিয়ে

লক্ষ্মীপুর কারাগারে বেশ ঘটা করে বিয়ে হল বহু ঘটনায় বিতর্কিত স্থানীয় মেয়র আবু তাহেরের ছেলে আফতাব উদ্দিন বিপ্লবের।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2014, 05:18 AM
Updated : 3 August 2014, 05:45 PM

১০ লাখ দেনমোহরে শুক্রবার বিকালে অনুষ্ঠিত এই বিয়ের অনুষ্ঠানে তাহের এবং তার আরেক ছেলে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান  এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুও উপস্থিত ছিলেন।

লক্ষ্মীপুর কারাগারে বিয়ের এই ঘটনা এটাই প্রথম বলে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। লক্ষ্মীপুর কারাগারের কারারক্ষক জয়নাল আবদিন বলেছেন, জেলা প্রশাসক অনুমতি দেয়ায় কারাফটকে এই বিয়ে হয়েছে।

বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের মামলায় আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল বিপ্লবের। তবে আওয়ামী লীগের গত মেয়াদে রাষ্ট্রপতি তার মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করার পর এখন যাবজ্জীবন সাজা খাটছেন বিপ্লব।

আওয়ামী লীগ নেতা তাহেরের ছেলে বিয়ে করেছেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার লামচরী এলাকার জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য সফিকুল ইসলামের ভাতিজা আবুল খায়েরের মেয়ে সানজিদা আক্তার পিউকে।

আরো দুটি খুনের মামলায়ও দণ্ডিত ৩৮ বছর বয়সী বিপ্লবের স্ত্রী পিউ লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার বিকালে আকস্মিকভাবে লক্ষ্মীপুর জেলা কারা ফটকের অবস্থা পাল্টে যায়। তাহের সমর্থক একদল কর্মী মোটর সাইকেল নিয়ে কারাগারের সামনে অবস্থান নেয়। এরপর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাহের সঙ্গীদের নিয়ে ঢোকেন কারাগারে, তার সঙ্গে কাজীও ছিলেন। সন্ধ্যায় সেখানেই হয় বিয়ে।

বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,কনের মাসহ উভয় পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই বিয়ে হয়। দেনমোহরের ১০ লাখ টাকা নগদে পরিশোধ করা হয়। মেয়েকে দেয়া হয় ৩০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার।

বিয়ে হওয়ার পর রাত সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে একটি কালো মাইক্রোবাসে করে কনেকে কারাফটকে নেয়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। সেখানেই বর-কনের সাক্ষাৎ হয়।

ওই সময় কয়েদির পোশাকের বদলে বিপ্লব পাঞ্জাবি পরে ছিলেন বলে সেখানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন।

কারাগারের একটি সূত্র জানায়, বিয়ের আগে কারাঅভ্যন্তরে বিপ্লবের গায়ে হলুদও হয়।

এই বিষয়ে তাহের কিংবা তার পরিবারের কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে কারারক্ষক জয়নাল আবদিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেলা প্রশাসকের অনুমতি থাকায় বিপ্লবকে কারাফটকে হাজির করা হয়। পরে সেখানে তার পরিবারের লোকজন কাবিননামায় স্বাক্ষরকাজ সম্পন্ন করার পর পুনরায় তাকে কারাগারের অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।”

রাতে কারাফটকে স্ত্রীর সঙ্গে বিপ্লবের সাক্ষাতের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কারারক্ষক এবিষয়ে আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক একেএম টিপু সুলতানের মোবাইল ফোনে সাংবাদিকরা একাধিকবার কল করলেও তিনি তা ধরেননি। বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে ফটক থেকে বলা হয়, “স্যার ব্যস্ত আছেন, এখন কারো সঙ্গে দেখা করবেন না।”